১০ ও ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুইটি দিন। ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে গঠিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার এবং জারি করা হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (The proclamation of Independence)। ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করছিল শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে মুজিবনগরের (স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষিত প্রথম রাজধানী) আম্রকাননে। ২০২১ সাল আমাদের মহান স্বাধীনতার যেমন সুবর্ণজয়ন্তী, তেমনি আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণেরও এই বছর সুবর্ণজয়ন্তী।
১৭ এপ্রিল ১৯৭১ বাঙালির ইতিহাসে ২৬ মার্চ ১৯৭১, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ ও ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ থেকে কোনোভাবেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ দিনটিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ একটি সম্পূর্ণ গুরুত্ববহ অধ্যায়ে প্রবেশ করে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতা ঘোষণাপূর্বক সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করলে দেশব্যাপী বিক্ষিপ্তভাবে যে যুদ্ধ শুরু হয়, ১৭ এপ্রিল তা সংঘবদ্ধ রূপ লাভ করে। এই প্রসঙ্গে ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’-এ বলা হয়েছে— ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থে, সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্ররূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম এবং তদ্বারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ইতিপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করিলাম, এবং এতদ্দ্বারা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকবেন, (ঘোষণাপত্রের ৯ম অনুচ্ছেদাংশ) এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপরাষ্ট্রপতি থাকিবেন এবং রাষ্ট্রপতি (এই ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু/সৈয়দ নজরুল) প্রজাতন্ত্রের সকল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হইবেন,)
১০ এপ্রিল যে ‘স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র’ (The Proclamation of Independence) গ্রহণ করা হয় ও প্রবাসী বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়, তা ১৭ এপ্রিলে প্রকাশ্য ঘোষণা ও শপথ গ্রহণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা লাভ করে। এই দিনে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ যুদ্ধ শুরু করে এবং বঙ্গবন্ধু কর্তৃক ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণাকে বৈধ ও আইনি রূপ দেওয়া হয়। যেমনটি বলা হয়েছে : ‘এবং যেহেতু এরূপ প্রতারণাপূর্ণ ব্যবহারের বাস্তব অবস্থা ও পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের ন্যায়সংগত দাবি পূরণের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের মর্যাদা ও সংহতি রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আবেদন জানান (প্রণিধানযোগ্য যে, তখন স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি এবং প্রশ্নও ওঠেনি। এমনকি প্রয়োজনও অনুভূত হয়নি। শুধু ঘটনার বর্ণনা দিতে এই কথা কয়টি লিখা হয়েছে। —নিবন্ধকার)। এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র হিসেবে গঠন ও ঘোষণা করছি এবং এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার প্রতি অনুসমর্থন দান করছি (আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বৈধতার জন্য এই আইনগত রূপদান প্রয়োজন ছিল)।
সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বছর আগে আমরা স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিলাম। ১০ ও ১৭ এপ্রিলের আগে সারা দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ অসংগঠিত ও অনেকটা বিশৃঙ্খলভাবেই দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসরদের মোকাবিলা করে যাচ্ছিল। মাত্র ১৫ দিনের মাথায় আমাদের জনপ্রতিনিধিগণ নিজেদেরকে সংগঠিত করেন একক দায়িত্বে। সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এক সংবদ্ধ ও সুগঠিত কাঠামোরূপ লাভ করে, যা দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধজয়ে সহায়তা করেছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু সশস্ত্রই ছিল না; নবগঠিত সরকারের অভ্যন্তরীণ বেসামরিক প্রশাসন, বৈদেশিক প্রচার-প্রচারণা, অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ, বিশ্ব রাষ্ট্রসমূহের সর্মথন আদায়, জাতিসংঘের অবিরাম প্রয়াস মুক্তিযুদ্ধকে ক্রমশ শক্তিশালী ও বিজয়কে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছিল। বন্ধুরাষ্ট্র ভারত এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সক্রিয় ও ইতিবাচক সমর্থনে, মার্কিনি ও চৈনিক সক্রিয় বিরোধিতা সত্ত্বেও আমরা ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ ঘটিয়ে বিজয়ের পতাকা উড্ডীন করতে সক্ষম হই।
১৭ এপ্রিলের এই ঐতিহাসিক দিনে পৌঁছাতে আমাদেরকে পার হতে হয়েছে অনেক বন্ধুর পথ। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ইতিহাসের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু মুজিব যে কথা বলেছিলেন, ‘…তাহলে ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে নিহত ১০ লাখ লোক আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করে গেছেন, তা সম্পাদনের জন্য, আমরা যাতে স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বাঁচতে পারি তার জন্য, আমরা যাতে নিজেদের ভাগ্যনিয়ন্তা হতে পারি তার জন্য প্রয়োজন বোধে আরো ১০ লাখ বাঙালি প্রাণ দেবে।’ এখানে উল্লেখ করা এই ‘আমরা’ কোন দেশের নাগরিক? ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে অনুষ্ঠিত এক সভায় শেখ মুজিব তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানের নামকরণ করেন ‘বাংলাদেশ’। এই বাংলাদেশকে বাস্তব রূপ দিতেই ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ, ১৯৭১-এর ৩ মার্চ ও ৭ মার্চের ঘোষণাবলি। ৩ মার্চ ১৯৭১-এ ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে পল্টন ময়দানের জনসভায় বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ যে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন, তাতে রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’ কবিতার প্রথম ১০ লাইনকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক ও স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এবং সবুজ জমিনের ওপর রক্তিম সূর্যের মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্রখচিত পতাকাকে বাংলাদেশের পতাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৭ এপ্রিলে পৌঁছাতে অবশ্য আমাদেরকে আরো কয়েকটি স্তর অতিক্রম করতে হয়েছিল। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাকে ভিত্তি করে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে এম এ হান্নানের ঘোষণা, ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় মেজর জিয়ার ঘোষণা, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের যুদ্ধ সংগঠন, একই সময়ে ময়মনসিংহে মেজর সফিউল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেজর খালেদ মোশারফ, চুয়াডাঙ্গায় মেজর আবু ওসমান চৌধুরী প্রমুখের নেতৃত্বে বাঙালি সৈনিকদের ও সমগ্র দেশব্যাপী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের যুদ্ধ সংগঠনের তত্পরতা উল্লেখযোগ্য। মোদ্দা কথা, ২৬ মার্চ থেকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ অসংগঠিতভাবে চলছিল। এই যুদ্ধকে পূর্বাঞ্চলে সংগঠিত রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় ৪ এপ্রিল। এই দিনে কর্নেল ওসমানী ও লে. কর্নেল এম এ রব (উভয়েই তদানীন্তন সময়ে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমএনএ ছিলেন) হবিগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমানায় অবস্থিত তেলিয়াপাড়ায় পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। এ বৈঠকে মেজর জিয়া, মেজর সফিউল্লাহ, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর কাজী নূরুজ্জামান, মেজর নূরুল ইসলাম, মেজর মমিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তারা ওসমানীকে প্রধান এবং এম এ রবকে উপপ্রধান করে মুক্তিফৌজ গঠন করে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব তাজউদ্দীন আহম্মেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, কামরুজ্জামানসহ প্রায় সকল এমএনএ ও এমপিএ ভারতে পৌঁছে নিজেদের একত্রিত করে ফেলেছেন এক জায়গায়। পৌঁছে গেছেন ছাত্র-যুব নেতৃবৃন্দও। আগরতলায় ও কলকাতায় ও শিলচরে তারা বৈঠক করলেন, নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করলেন। এবং ১০ এপ্রিল The Proclamation of Independence গ্রহণ করা হয় ও প্রবাসী বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ এ প্রবাসী বিপ্লবী সরকার তাজউদ্দীন-নজরুল-মনসুর-কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করে মেহেরপুরের বৈধ্যনাথতলার মুজিবনগরে। সেই থেকে মুক্তিযুদ্ধের এক নতুন অভিযাত্রা শুরু হয়। ১৭ এপ্রিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এক সর্বাত্মক ও সংগঠিত রূপ লাভ করে। শুধু অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ নয়, শুরু হয় রাজনীতি, প্রচার ও কূটনৈতিক যুদ্ধ। সশস্ত্র যুদ্ধের চেয়ে আমাদের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও প্রচারযুদ্ধ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কোনোভাবেই কম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেনি। এখানেই ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ এ দিনটির ঐতিহাসিকতা। সমগ্র মুক্তিযুদ্ধকে মুজিবনগর সরকার একটি দৃঢ় সাংগঠনিক রূপ দিয়েছিল। মুজিবনগর সরকার না হলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আদৌ সফলতার মুখ দেখত কি না, তা বিবেচনার দাবি রাখে। বিবেচনার দাবি রাখে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভূমিকার বিষয়টিও। তারা পশ্চাদপসরণ করলে মুক্তিযুদ্ধ কখনোই কি সংগঠিত রূপ নিত?
আমরা মনে করি, ১৭ এপ্রিলের পথ ধরেই জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাপূর্ণতা লাভ করে এবং পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ছাড়িয়ে আনতে সক্ষম হই। ১০ ও ১৭ এপ্রিলকে ঘিরে বাংলার মুক্তিসংগ্রামের যে ঘনঘটা তা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়। এপ্রিলের এই সব ঘটনাবলিকে ইতিহাসের বাস্তবতার নিরিখে বিচার করতে হবে। মুজিবনগরের প্রথম বাংলাদেশ সরকার এবং তাজউদ্দীন-নজরুল-মনসুর আলী-কামরুজ্জামানের ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি (খুনি) মোস্তাকের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডকেও বিবেচনায় নিতে হবে। মোস্তাকের নেতৃত্বে একটি ক্ষুদ্র অথচ কূটচালে তত্পর গোষ্ঠী আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে বিপথগামী করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে। মোস্তাকের ষড়যন্ত্রকে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে গুরুত্ব না দেওয়ায় শান্তিকামী ভাবাদর্শ আমাদের সমাজকাঠামোয় বহাল তবিয়তে রয়ে যায়। এমনকি এদের একটি অংশ এখনও সর্বোতভাবে বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা প্রশ্নে তাদের অনীহা, ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক অবস্থানের বিপরীতে ওদের অবস্থানই মোস্তাকের ধারার ফল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও মুজিবাদর্শের দৃঢ় অবস্থানই স্বাধীনতাবিরোধী এই চক্রটিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম। রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্রবিরোধীদের অবাধ তত্পরতার সুযোগ হাজার বছরের শৃঙ্খল ভাঙা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য কখনো সুখকর হতে পারে না। এবং স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে সুদৃঢ় ও মজবুত করতে পারবে না। রাষ্ট্র জন্মের পঞ্চাশ বছর অতিবাহনেও স্বাধীনতাবিরোধীদের অপতত্পরতাকে আদর্শিক ও রাষ্ট্রিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হলে আমাদের রাষ্ট্রদর্শনের ভবিষ্যত্ অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে। তাই আমরা মনে করি বাংলাদেশের প্রথম সরকারের সুবর্ণজয়ন্তীতে উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে ভাববার সময় খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সামগ্রিক বিবেচনায় বলতে চাই যে, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও ইতিহাসের এক অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুজিবনগর দিবসকে খাটো করে দেখার প্রয়াস থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে, ইতিহাসের সঠিক পাঠ অপূর্ণ থেকে যাবে। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পাঠ হবে খণ্ডিত। কিন্তু ইতিহাস তো ইতিহাসই।
লেখকঃ যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংসদ সদস্য,
পঁচাত্তর পরবর্তী প্রতিরোধ যোদ্ধা,
সম্পাদক, মত ও পথ।