সাবেক এমপি গাজী আমজাদ হোসেন মিলন আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন
বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন। ফাইল ছবি

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলন আর নেই।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুচ আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

universel cardiac hospital

গাজী আমজাদ স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। প্রবীণ এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে তাড়াশ-রায়গঞ্জ তথা চলনবিল এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আমজাদ হোসেন মিলন ১৯৪৯ সালের ১১ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চলনবিল অধ্যুষিত মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের মাগুড়াবিনোদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মৃত কবি ম ম আব্দুর রহমান বিনোদী, মায়ের নাম মৃত অছিরন নেছা।

গাজী আমজাদ হোসেন মিলন তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নররত অবস্থায় রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভবে জড়িয়ে পড়েন ষাটের দশকে।

১৯৬৯ সালে তাড়াশ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় পাকিস্তান স্বৈরশাসকের শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজ এলাকায় নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মাতৃভূমি রক্ষার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নাটোর জেলাধীন গুরুদাসপুর কলেজে থেকে এইচএসসি পাস করেন আমজাদ হোসেন মিলন।

স্বাধীনতাত্তোরকালে তাড়াশ উপজেলার ৪নং মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়ন পরিষদে দুই-দুইবার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন (একবার বিনা প্রতিদ্বন্দিতায়) তিনি। পরবর্তীকালে সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি থানার সমবায়ীদের প্রত্যক্ষ ভোটে সিরাজগঞ্জ সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তখন থেকেই সুদীর্ঘ ১৮ বছর তাড়াশ থানা আওয়ামী লীগের পর্যায়ক্রমে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালে পুনরায় তাড়াশ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ সময় রাজশাহী বিভাগীয় উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের একবার কৃষি বিষয়ক সম্পাদক, আরেকবার ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে এবং তিনবার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ তাড়াশ উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শেয়ার করুন