‘সরকার উৎখাতের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্য ছিল মামুনুলের’

নিজস্ব প্রতিবেদক

মামুনুল হক
ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের উসকানি দিয়ে মাঠে নামিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতার আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে সরকার উৎখাতের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্য ছিল তার।

রিমান্ডে থাকা মামুনুল হক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন বলে মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

universel cardiac hospital

উপ-কমিশনার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন মামুনুল হক। তিনি হেফাজতের নেতাকর্মীদের উসকানি দিতেন এবং বলতেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে হেফাজতের সমর্থন ছাড়া কেউ ক্ষমতা দখল করতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানার মামলার বাদীর অভিযোগ উল্লেখ করে এবং সেদিনের হামলার ভিডিও দেখিয়ে মামুনুলকে প্রশ্ন করা হয়, মসজিদের সাদপন্থী লোকদের মারধর করা হলো কেন? তিনি বলেছেন, এটি ঠিক হয়নি। মামুনুল ও তার অনুসারীরা মূলত তাবলীগের অন্য গ্রুপ জুবায়েরপন্থী। তাই মামুনুল ভেবেছিলেন, সাদপন্থীদের পিটিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দিলে তারা দুর্বল হয়ে যাবেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাকে তার কয়েকটি ওয়াজের ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে তিনি সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে উসকানি দিয়েছেন। শাহরিয়ার কবিরকে মুরগি চোর বলা, হাসানুল হক ইনু ও সাবেক বিচারপতি শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিককে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই জুতাপেটা করার কথা বলে লোকজনকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছেন। এসব বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মামুনুল হক বলেন, ‘জোসের কারণে এসব মন্তব্য করে ফেলেছি।

এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মামুনুল হকের পেছনে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের মদদ আছে কি-না তাও ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞেস করা হবে। তাকে কেউ ইন্ধন দিয়ে থাকলে বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজত নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালায়। ওই সময় সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত ১৮ জন।

আর এ মাসের শুরুতে মামুনুল হকের সোনারগাঁওয়ে রিসোর্টকাণ্ডের পর হেফাজতের ভাংচুর ও সহিংসতা এবং হেফাজতের এ নেতার একাধিক বিয়ে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়।

এরপর থেকে হেফাজতের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য পর্যায়ের নেতাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর এক পর্যায়ে রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ড মুঞ্জুর করেন আদালত।

শেয়ার করুন