১৪ দিনের জন্য ভারতের সঙ্গে স্থল পথে চলাচল বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে
ফাইল ছবি

দেশে করোনার ভারতীয় সংস্করণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সোমবার থেকে ১৪ দিনের জন্য দেশটির সঙ্গে স্থল পথে চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ভারতের ডাবল স্ট্রেনথের করোনার প্রকোপে মৃত্যু ও সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ইতোমধ্যেই দেশটির সঙ্গে আকাশপথে চলাচলও বন্ধ করা হয়েছে।

রোববার বিকালে সীমান্ত বন্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

universel cardiac hospital

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেয়া সিদ্ধান্তটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আজকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত বন্ধ থাকবে। যারা আসার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছেন বা এসে পড়বেন, তারা যশোর বর্ডার এবং দেশের বর্ডার এলাকায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।

আজকেও যারা দেশে ঢুকবেন, তাদেরকেও ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।

আজকে থেকে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক চলাফেরা, যাতায়াত বন্ধ থাকবে।

ভারতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বড় ধরনের অবনতি হওয়ায় কদিন আগে থেকেই দেশটির সঙ্গে আকাশপথে চলাচল বন্ধ করেছে বাংলাদেশ।

এদিকে রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনও বলেন, ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্থল সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, এই ১৪ দিন মানুষের যাতায়াত বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী যানবাহন চলবে।

ভারতে গত তিন দিনে প্রায় ১০ লাখ মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮৬ জনের। এই সময়ে এ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৬২৪ জন। করোনার এই ভয়াবহ সংক্রমণে ভারতের রাজধানী দিল্লির হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

অপর এক অনুষ্ঠানে রোববার এক আলোচনা সভার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাশার খুরশীদ আলমও ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের মত দেন। তিনি বলেন, আর কোনো বিপর্যয় এড়াতে এখন ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার উচিত। এ বিষয়ে আমাদের মতামত আমরা যথাযথ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, দেশে ভারতের ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি আছে কিনা এমন কোনো নিশ্চিত খবর আমাদের কাছে নেই। তবে দেশে নাইজেরিয়ার ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার কথা গণমাধ্যমেই জেনেছি।

বাংলাদেশে গত বছরের মার্চে প্রথম করোনা শনাক্ত হলেও চলতি বছরের মার্চের শেষে এসে সংক্রমণ ও মৃত্যু ভয়াবহভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মার্চ মাসের শেষ দিক থেকে তা শুধুই বাড়ছে। গত ১৬ এপ্রিল মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ। সংক্রমণও একদিনে সাত হাজার পেরিয়ে যায়।

শেয়ার করুন