নেই আলোর ঝলকালি, ক্যামেরার ফ্ল্যাশে ক্লিক ক্লিক। সামাজিক দূরত্ব রেখে বসেছেন সবাই। যে কারণে পুরস্কার ঘোষণার পর নেই আপনজনকে জড়িয়ে ধরার উচ্ছ্বাস। জাতপাত, গায়ের রং নিয়ে যে আর মাথাব্যথা নেই অস্কারের, মনোনয়নের পর সেই প্রমাণ পাওয়া গেছে অস্কারের ওয়াচ পার্টি আর মূল আয়োজনেও। মনোনয়ন আর বিজয়ী—সবদিক থেকেই সর্বকালের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় মনোনয়নের তালিকা এটি।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় রাতে কারা হাসলেন শেষ হাসি।
সেরা সিনেমা: নোম্যাডল্যান্ড
সেরা পরিচালক: ক্লোয়ি ঝাও (নোম্যাডল্যান্ড)
সেরা অভিনেতা: অ্যান্থনি হপকিন্স (দ্য ফাদার)
সেরা অভিনেত্রী: ফ্রান্সিস ম্যাকডোম্যান্ড (নোম্যাডল্যান্ড)
সেরা সহ-অভিনেতা: ড্যানিয়েল কালুইয়া
সেরা সহ-অভিনেত্রী: ইয়া-জাং উন (মিনারি)
সেরা মৌলিক গান: ফাইট ফর ইউ (জুডাস অ্যান্ড দ্য ব্ল্যাক মেসিয়াহ)
সেরা এনিমেটেড সিনেমা: সোল
সেরা পরিচালকের অস্কার হাতে ক্লোয়ি ঝাও
সেরা পরিচালকের অস্কার হাতে ক্লোয়ি ঝাও ইনস্টাগ্রাম
সেরা মেকআপ ও কেশসজ্জা: মা রেইনি’স ব্ল্যাক বটম
ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট: টেনেট
সিনেমাটোগ্রাফি: মাঙ্ক
সম্পাদনা: সাউন্ড অব মেটাল
প্রোডাকশন ডিজাইন: মাঙ্ক
শব্দ: সাউন্ড অব মেটাল
সেরা আন্তর্জাতিক সিনেমা: এনাদার রাউন্ড (ডেনমার্ক)
সেরা প্রামাণ্যচিত্র: কোলেট
প্রামাণ্যচিত্র ফিচার: মাই অক্টোপাস টিচার
দ্য ফাদার সিনেমায় এন্থনি হপকিন্স
দ্য ফাদার সিনেমায় এন্থনি হপকিন্স ইনস্টাগ্রাম
লাইভ অ্যাকশন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: টু ডিসট্যান্ট স্ট্রেঞ্জার্স
অ্যানিমেটেড স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ইফ এনিথিং হ্যাপেনস, আই লাভ ইউ
সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য: প্রমিসিং ইয়ং উম্যান
সেরা এডাপ্টেড চিত্রনাট্য: দ্য ট্রায়াল অব শিকাগো সেভেন
অরিজিনাল স্কোর: সোল
কস্টিউম ডিজাইন: মা রেইনি’স ব্ল্যাক বটম
বাংলাদেশ সময় সকাল ছয়টায় শুরু হয়ে নয়টা পর্যন্ত চলল এ বছর চলচ্চিত্রের দুনিয়ার সবচেয়ে বড় আসর ৯৩তম অস্কার। গোল্ডেন গ্লোব, বাফটার পথে হেঁটে অস্কারও এবার আয়োজিত হলো ছোট পরিসরে। মার্কিন মুলুকে এবারে একটি নয়, দুটি ভেন্যু।
ঐতিহাসিক ডলবি থিয়েটার তো আছেই, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিয়ন স্টেশন। তা ছাড়া যুক্তরাজ্যের লন্ডন আর ফ্রান্সের প্যারিসেও রাখা হয়েছিল দুটি স্টেশন। সেখান থেকেও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারা মনোনীত শিল্পী আর কলাকুশলীরা যোগ দিয়েছেন। মনোনয়নে বারবার উচ্চারিত হয়েছিল ‘ম্যাঙ্ক’, ‘দ্য ফাদার’, ‘নোম্যাডল্যান্ড’, ‘মিনারি’, ‘ব্ল্যাক মাসিহা’, ‘সাউন্ড অব মেটাল’-এর মতো ছবিগুলো। একমাত্র ভারতীয় ছবি হিসেবে (যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) অস্কারের দৌড়ে শামিল হয়েছিল আদর্শ গৌরব, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও রাজকুমার রাও অভিনীত ‘দ্য হোয়াইট টাইগার’। কিন্তু পুরষ্কার হাতে তুলতে পারেনি।
এবারের অস্কার অনেক দিক থেকেই আলাদা। হবে কি হবে না করেও যে হলো, এটা বিশ্ব চলচ্চিত্রকে দিচ্ছে ইতিবাচক বার্তা আর শক্তি। অস্কার আয়োজনের হলরুমে যাঁদের বসে থাকতে দেখছেন, একবার নয়, দুবার নয়, তিন-তিনবার করোনা পরীক্ষার ফল দেখিয়েই তাঁরা এ আয়োজনে অংশ নিয়েছেন। তাপমাত্রা পরীক্ষা করে ঢুকতে তো হয়েছেই। যতক্ষণ অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হচ্ছে না, সেই সময়ে মাস্ক ছিল বাধ্যতামূলক। পুরো বিষয়টা নজরদারি করার জন্য ছিল একটা সুরক্ষা দল। আয়োজক, মনোনীত সদস্য ও তাঁদের নিকটাত্মীয় ছাড়া মাত্র ১৭০ জন ভাগ্যবান দর্শক সরাসরি উপভোগ করেছেন এই আয়োজন। আর অস্কার তো হলো, এবার যাঁদের হাতে পুরস্কার উঠেছে আর যাঁদের হাতে ওঠেনি, তাঁদের সবাইকে থাকতে হবে বাধ্যতামূলক ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনে। অস্কারের মূল অনুষ্ঠানের আগে ও পরে রেড কার্পেটের ভিড় খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতিতে তা হয়নি। চুপিসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একাডেমি কর্তৃপক্ষের নিজেদের আলোকচিত্রীদের নিয়েই হয়ে গেল।