করোনা ভাইরাসের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ভারত। দেশটিতে প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড অক্সিজেন সংকটে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে অন্য দেশ থেকে মোবাইল অক্সিজেন প্লান্ট নিয়ে এসেছে ভারত। বাতাসে ভাসছে লাশের গন্ধ।
দেশটিতে মর্গ ও শ্মশানে ভিড় পড়ে গেছে। শ্মশানে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় দিল্লিসহ কয়েক রাজ্যে গণচিতা তৈরি করা হয়েছে। তাতেও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। খোড়া হচ্ছে গণকবর এবং মরদেহ পোড়াতে বানানো হয়েছে অস্থায়ী শ্মশান। জাত-ধর্ম ভুলে মৃতদেহ সৎকারে সহযোগিতা করছে মুসলিমরাও।
কয়েকটি রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মীরা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা জানিয়েছেন, এর আগে এমন অবস্থা কখনো দেখেননি তারা। ভারতে এখন যে হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তার গতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে অনেক বেশি। ভারতে এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে যুক্তরাষ্ট্রও পেছনে পড়ে যাবে। করোনার প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ভারতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মে মাসে ভারতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর রূপ নেবে। এসময়ে একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সংক্রমণও হবে রেকর্ড পরিমাণ।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত একদিনে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩১ জন। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮০৬ জনের। এখন পর্যন্ত এটিই দেশটিতে করোনায় একদিনে হতাহতে সর্বোচ্চ রেকর্ড। প্রতিদিনই এই রেকর্ড অতিক্রম করছে।
ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ৭৩ লাখ ৬ হাজার ৩০০ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ১১৬ জন।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৫২ জনের প্রাণ নিয়েছে করোনা। এছাড়া সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৩ কোটি ২৮ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯ জনের দেহে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৩১ লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ কোটি ৭৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৯ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১২ কোটি ৫৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩৯৩ জন।