ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডব: ওসির পর এবার এসবির এএসপিকে বদলি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

এএসপি আলাউদ্দিন চৌধুরী
এএসপি আলাউদ্দিন চৌধুরী। ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৬-২৮ মার্চ তিন দিন হেফাজতে ইসলামের নারকীয় তাণ্ডব চালানোর এক মাস পূর্ণ হওয়ার দিনে গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. আবদুর রহিমকে রংপুরে বদলি করা হয়। এর এক দিন পর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আলাউদ্দিন চৌধুরীকেও বদলি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) পুলিশ সদর দফতরের এক আদেশে তাকে সিলেট রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) বদলি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিন জানান, বুধবারের (২৮ এপ্রিল) মধ্যেই আলাউদ্দিন চৌধুরীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।

এর আগে সোমবার পুলিশ সদর দফতরের এক আদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিমকে রংপুর রেঞ্জ পুলিশে বদলি করা হয়।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে হেফাজতের ব্যানারে মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ওই দিন বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা চালিয়ে জাতির জনকের ম্যুরাল ভাংচুরসহ পুলিশসুপারের অফিসে ভাংচুরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।

এ ছাড়াও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, শহীদ ধীরেন্দ্রসনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, সুর সম্রাট স্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দির,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীরেত পরিণত করে।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি সবাই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী। ৫৬টির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা হয়।

এসব মামলায় মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত এক মাসে ৩৭৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে হেফাজতের পদধারী কেবল তিনজন নেতা রয়েছেন।

শেয়ার করুন