শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হওয়ায় নায়ক ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। অভিনেতার ছেলে রোশান হোসেন পাঠান গণমাধ্যমকে এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরশু (বুধবার) বাবাকে কেবিনে নেয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি খুব ধীর গতিতে হচ্ছে।’
দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের ‘মিয়া ভাই’ খ্যাত অভিনেতা ও ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ফারুক। এক মাসেরও বেশি সময় ছিলেন অচেতন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসায় কোনো সাড়া দিচ্ছিলেন না।
এই অবস্থার মধ্যে কিছুদিন আগে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, নায়ক ও সাংসদ ফারুক মারা গেছেন। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। তবে এই খবর একেবারেই সত্যি নয় বলে সে সময় অভিনেতার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ফারুকের মৃত্যুর খবরকে তারা গুজব বলে উড়িয়ে দেন। ক্ষোভ প্রকাশও করেন।
এরপর গত মঙ্গলবার ফারুক চোখে মেলে তাকান এবং কথাও বলেন। বহুদিন পর এই দৃশ্য দেখে আবেগে কেঁদে ফেলেন তার সহধর্মিণী ফারজানা হোসেন পাঠান। ফারুক-পত্মী গণমাধ্যমকে জানান, স্বামী অচেতন থাকা অবস্থায় প্রতিটি দিন তিনি কেঁদে কাটিয়েছেন আর আল্লাহর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন।
নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে গত ৪ মার্চ সিঙ্গাপুরে যান ফারুক। চেকআপের পর তার ইনফেকশন ধরা পড়লে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ মার্চ খিঁচুনি উঠায় ফারুককে আইসিইউতে নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৮ মার্চ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। ২১ মার্চ হঠাৎ জ্ঞান হারালে আবারও তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে।
এর আগে ২০১২ সালের জুলাইয়ে নায়ক ফারুক এক মাস ধরে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৩ সালের ৩০ আগস্ট সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে ভর্তি হন।
সেখান থেকে চিকিৎসা শেষে ২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন ফারুক। এরপর থেকে বেশ কয়েক বছর তিনি ভালোই ছিলেন। ২০২০ সালের ১৮ আগস্টে আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভীষণ জ্বর নিয়ে ভর্তি হন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে। যদিও তখন তার করোনা নেগেটিভ ছিল। আট দিন চিকিৎসা করিয়ে মোটামুটি সুস্থ হয়ে তিনি বাসায়ও ফেরেন।
কিন্তু কদিন না যেতে তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বিশেষ বিমানে করে তাকে নেয়া হয় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে। সেখানে কিছু পরীক্ষার পর তার যক্ষ্মা ধরা পড়ে। দেড় মাস চিকিৎসা করিয়ে তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন।
এর কিছুদিন না যেতে অক্টোবরের মাঝামাঝিতে ফারুক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তবে যক্ষ্মার মতো জয় করেন করোনাকেও। এবারও ‘সারেং বউ’ খ্যাত নায়ক সুস্থ হয়েই দেশে ফিরে আসবেন। পরিবারের পাশাপাশি এমন প্রত্যাশা অভিনেতার ভক্ত-সমর্থক ও সহকর্মীদের। আশার কথা হচ্ছে, ফারুক সুস্থতার দিকেই যাচ্ছেন।