দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে ছুটছেন জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইলিশ
ফাইল ছবি

মা ইলিশের নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করতে দেশের ৬টি অভয়াশ্রমে দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। যে কারণে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনায় পড়েনি জেলেদের জাল। সাগরের মোহনা এবং ইলিশ চলাচলকারী নদ-নদীতে মাছ ধরায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হয়েছে গতকাল মধ্যরাতে। ফলে স্বস্তি ফিরে আসা জেলেরা পুরোদমে ইলিশ আহরণে সাগরপানে ছুটছেন।

শত-শত নৌকায় হাজার-হাজার জেলে ছুটছেন নদী-সাগরে। এতে কয়েকদিন ধরে প্রাণহীন থাকা জেলে পল্লীগুলোতে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। জেলে পল্লীগুলোতে বইছে আনন্দের জোয়ার, জেলেদের মুখে ফুটছে হাসি। জালে রূপালী ইলিশের ঝাঁক ধরা পড়বে এমন আশায় বুক বেঁধেছেন জেলেরা।

চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিণা ফেরীঘাট, বহরিয়া, রনগোয়াল, পুরানবাজার, আনন্দ বাজার এলাকায় গতকাল জেলে পল্লীগুলো ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ ধরতে মুখিয়ে আছেন জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার অবসর সময়ে মাছ ধরার নৌকা মেরামত ও জাল সেলাই করে সময় কেটেছে তাদের। নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় জেলেদের মাঝে ফিরে আসে আনন্দঘন পরিবেশ।

মৎস্য কর্মকর্তাদের দাবি, অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল হয়েছে। যার সুফল পাওয়া যাবে আগামীতে। মা ইলিশ সংরক্ষণ ও জাটকা রক্ষা কার্যক্রম সফল হওয়ায় আগামীতে দেশে ইলিশের উৎপাদন রেকর্ড ছাড়াবে বলে আশাবাদী ইলিশ গবেষকরা।

জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় জাটকা নিধন প্রতিরোধ কর্মসূচির আওতায় মার্চ ও এপ্রিলজুড়ে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। এই সময়ে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, এ সময় জেলার চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৪০ হাজার পাঁচ জন জেলের পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি তালিকায় চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন, এমন জেলের সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। আর তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা আরও তিন লাখ।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী জানান, পদ্মা ও মেঘনার অভয়াশ্রমে গত দুই মাসে জাটকা সংরক্ষণ অভিযানে ৩৯ মেট্রিক টন জাটকা, ৩৮ কোটি ৮ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা নিধনের দায়ে তিন শতাধিক জেলেকে আটক করে কারাদণ্ড এবং ৫ শতাধিক জেলেকে আর্থিক জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। ইতোপূর্বে এতো বেশি জাটকা এবং কারেন্ট জালের চালান ধরা পড়েনি।

শেয়ার করুন