জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের নতুন পলিসি নিয়ে আবারও গুজব ও আলোচনা শুরু হয়েছে। ‘সরকার হোয়াটসঅ্যাপের কল/বার্তা রেকর্ড করছে’—এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
গত জানুয়ারিতে ভারতে ‘সরকার হোয়াটসঅ্যাপসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল/বার্তা রেকর্ড করছে’—গত জানুয়ারিতে ভারতে এই মেসেজ ভাইরাল হয়। তখন ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক করে জানায়, বিষয়টি ভুয়া। এ ছাড়া ভারত সরকারের প্রেস ইনস্টিটিউটও ফ্যাক্ট চেক করে জানায়, সরকার এ ধরনের কোনো বার্তা দেয়নি এবং বার্তাটি ভুয়া।
সম্প্রতি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া গুজবে বলা হয়, সরকার সবকিছুই রেকর্ড করছে। সরকারবিরোধী কোনো বার্তা পাঠালে সেখানে তিনটি নীল টিক চিহ্ন দেখাবে অর্থাৎ সরকার তা দেখেছে। আর লাল টিক চিহ্ন দেখালে বুঝতে হবে, সরকার বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন কর্মকর্তা জানান, এ ধরনের গুজবের কথা তাঁরা জানেন না। এ বিষয়ে কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করেনি।
হোয়াটসঅ্যাপ প্রাইভেসি–বিষয়ক নীতিমালা ও ব্যবহারের শর্ত পরিবর্তনের নোটিফিকেশন গত জানুয়ারি থেকে তার ব্যবহারকারীকে দিয়ে আসছিল। তাতে হোয়াটসঅ্যাপ বলেছিল, নতুন শর্ত গ্রহণ করা না হলে ৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে না। নতুন পলিসি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়ে। নানান গুজবের মুখে পড়ে এই প্রতিষ্ঠান। তারা পিছিয়ে আসে এবং ১৫ মে পর্যন্ত সময় বাড়ায়।
হোয়াটসঅ্যাপ প্রাইভেসি–বিষয়ক নীতিমালা নিয়ে তাদের ব্লগে জানিয়েছে, নতুন নীতি হচ্ছে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে চ্যাট বা শপিংয়ের জন্য, যা সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। ব্যক্তিগত বার্তা সব সময় যেমন এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড ছিল, তেমনই থাকবে। হোয়াটসঅ্যাপ তা পড়তে বা শুনতে পাবে না।
হোয়াটসঅ্যাপের নতুন নীতি ও গুজব বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন নীতিতে এখন গ্রাহক আরও বেশি করে বিজ্ঞাপনসংশ্লিষ্ট জিনিস দেখতে পাবেন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ যেটা প্রতিজ্ঞা করেছে, সেটাই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন প্রযুক্তি ব্যবহারে ব্যক্তিগত শতভাগ সুরক্ষিত থাকবে, তা আশা করাও ঠিক নয়।
তিনি বলেন, কোনো সরকার চাইলে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার নাগরিকদের ওপর নজরদারি করতে পারে। তবে ‘হোয়াটসঅ্যাপের বার্তা, কল সরকারের সব রেকর্ড করবে’ বিষয়ে যে বার্তা ছড়িয়েছে, তা গুজব।
হোয়াটসঅ্যাপ তার নতুন নীতি গ্রহণ করার জন্য ইতিমধ্যে গ্রাহককে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছে। প্রথমবার যখন হোয়াটসঅ্যাপ নতুন নীতি নিয়ে আসে, তখন তারা বলেছিল, ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন শর্তে সম্মতি না জানানো ব্যবহারকারীরা আরও কিছু সময়ের জন্য হোয়াটসঅ্যাপে কল করা ও গ্রহণ করতে পারবেন। তাঁরা নোটিফিকেশনও পাবেন, তবে তা বেশি সময়ের জন্য নয়। এই সময় কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। পরে হোয়াটসঅ্যাপ তা ১৫ মে পর্যন্ত সময় বাড়ায়।