রাজধানী ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে গাছ কাটা বন্ধ করতে সরকারের কাছে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামিম আখতার এবং প্রধান আর্কিটেক্ট অব বাংলাদেশ মীর মনজুর রহমানকে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গাছ কাটা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নোটিশে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বৃহস্পতিবার এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশেষ গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা সংরক্ষনের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালে করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট উদ্যান সংরক্ষণে কয়েকদফা নির্দেশনা দেন। ওই রায়ে বলা হয়, ‘রমনা তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা নিছক একটি এলাকা নয়। এই এলাকাটি ঢাকা শহর পত্তনের সময় হতেই এ পর্যন্ত একটি বিশেষ এলাকা হিসেবে পরিগণিত। এর একটি ঐতিহাসিক ও পরিবেশগত ঐতিহ্যও আছে।’
রায়ে বলা হয়, ‘আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্র এই এলাকা। এই পরিপ্রেক্ষিতেও সম্পূর্ণ এলাকাটি একটি বিশেষ এলাকা হিসাবে সংরক্ষণের দাবী রাখে। এখানে এমন কোনো স্থাপনা থাকা উচিত নয়, যা এই এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য বিন্দুমাত্র ম্লান করতে পারে।’
রায়ে আরও বলা হয়, ‘পরিবেশগত দিক হতে রমনার উদ্যান বা রমনা রেসকোর্স ময়দান ঢাকা শহরের ফুসফুসের ন্যায় অবস্থান করছে। কোনভাবেই এটাকে রোগাক্রান্ত করা যায় না। যেহেতু স্মরণ কাল হতেই এটা উদ্যান হিসেবে পরিচিত, একারণে ২০০০ সালের ৩৬ নম্বর আইন অনুসারে সোহরাওয়ার্দী ‘উদ্যান’ সংজ্ঞার আওতাধীন এবং এই জায়গার শ্রেণি সাধারণভাবে অপরিবর্তনীয়। এটাকে অনাবশ্যক স্থাপনা দ্বারা ভারাক্রান্ত করা অবৈধ হবে।’
নোটিশে বলা হয়, এই রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেষ্টুরেন্ট/দোকান প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবেশ ধ্বংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যা রায়ের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। যা আদালত অবমাননার সামিল।