করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আঘাতে টালমাতাল গোটা ভারত। হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের সংকটের কারণে মারা যাচ্ছেন অনেক করোনা রোগী। মৃতদের সৎকারে শ্মশানেও জায়গার সংকুলান হচ্ছে না।
প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লাখের বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষের প্রাণহানী ঘটছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও নাকে তেল দিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলা চালিয়ে নিচ্ছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই।
যদিও পরে করোনার কাছে হার মেনে জমজমাট টুর্নামেন্টের মাঝপথেই স্থগিত করতে হয়েছে। এতে অবশ্য সন্তুষ্ট নন মুম্বাই হাইকোর্টের এক আইনজীবী।
মহামারির এমন পরিস্থিতিতে আইপিএল আয়োজনের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন সেই আইনজীবী।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, সৌরভ গাঙ্গুলীর বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে মুম্বাই হাইকোর্টে ১০০০ কোটি টাকার জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন ভনাদন শাহ নামের এক আইনজীবী ।
আদালতে ভনাদন শাহ দাবি করেছেন, বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা আদায় করে তা ভারতের করোনা মোকাবিলায় ব্যবহার করা হোক। কেনা হোক অক্সিজেন সিলিন্ডার।
বার্তা সংস্থা পিটিআইকে ওই আইনজীবী বলেন, ভারতের এমন সংবেদনশীল মুহূর্তে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য বিসিসিআইকে দায় নিতেই হবে। আইপিএল কি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য? যেখানে টাকার অভাবে মানুষ না খেয়ে মরছে, চিকিৎসার অভাবে লাশে পরিণত হচ্ছে সেখানে মাঠে কোটি কোটি টাকা উড়িয়েছে বিসিসিআই। এতে যা ক্ষতি হয়েছে তার জন্য বিসিসিআই ১০০০ কোটি টাকা দান করুক। যাতে হাসপাতালে কোভিড রোগীদের আরো ভালোভাবে চিকিৎসা সম্ভব হয়।
বায়ো বাবল সুরক্ষায় সংক্রমণ ঘটবে না বলে বিসিসিআইয়ের দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন আইনজীবী ভনাদহ শাহ।
আদালতে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, বায়ো বাবলে থাকলেও ক্রিকেটাররা সামাজিক দূরত্ববিধি না মানায় সংক্রমণের আশঙ্কা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা এখন দৃশ্যত। যতই সুরক্ষায় থাকুক। সংক্রমণের আশঙ্কা তো থেকেই যায়।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার শাহরুখ খানের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বরুণ চক্রবর্তী ও সন্দীপ ওয়ারিয়র করোনায় আক্রান্ত হলে একটি ম্যাচ স্থগিত করা হয়। এরপর চেন্নাই সুপার কিংসের বোলিং কোচ বালাজি করোনা আক্রান্ত হন।
মঙ্গলবার সেই আক্রান্তের তালিকায় নাম লেখান সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের অমিত মিশ্র। তারপরই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় আইপিএল। সবমিলিয়ে টুর্নামেন্টে ২৯টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। ফাইনালসহ আরও ৩১টি ম্যাচ বাকি রয়েছে।