আজ বৃহস্পতিবার মেয়াদের শেষ দিন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান। এসব জনবল নিয়োগের বৈধতার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৬ মে) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইউজিসির সদস্য ড. মো. আবু তাহের, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ এবং ইউজিসির পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।
কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটি অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশ করবে।
এর আগে উপাচার্য এম. আব্দুস সোবহান ১২৫ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিচ্ছেন এমন গুঞ্জন উঠলে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উপাচার্য ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও চাকরি প্রত্যাশীরা অবস্থান নেয়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ শুরু করলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান চঞ্চল, হবিবুর হলের সেকশন অফিসার আবদুল্লাহ আল মাসুদসহ আরও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশি নিরাপত্তায় উপাচার্যের বাসভবন ত্যাগ করলেন এম আব্দুস সোবহান।
অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরের জন্য উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে মেয়াদের প্রথম দিকে নিয়োগ যোগ্যতা কঠোর করা এবং পরে তা শিথিল করে মেয়ে এবং জামাতাকে নিয়োগ দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে, যার প্রমাণও পায় ইউজিসির তদন্ত কমিটি।
এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে উপাচার্যকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে উপাচার্য তার মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ করেছেন বলে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে।