ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ধড়পাকড়ের পরিপ্রেক্ষিতে উগ্রপন্থি ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতাকর্মী ভারতে পালাতে পারেন। বিশেষ করে তারা পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে ঢুকতে পারেন বলে ভারতকে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) ইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিসের বরাত দিয়ে ব্যাঙ্গালোর মিরর এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশে অর্ধশতাধিক হেফাজতের শীর্ষ নেতা ও ইসলামি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামুনুল হকের মতো শীর্ষ হেফাজত নেতাও রয়েছেন। এছাড়া চিহ্নিত করা হয়েছে সহিংসতায় হেফাজতকে অর্থ সহায়তাকারী প্রায় ৩০০ জনকে। ইতোমধ্যে মামুনুল হক পুলিশের কাছে স্বীকারও করেছেন যে, তার সংগঠন শেখ হাসিনা সরকারকে হঠিয়ে বাংলাদেশে তালেবান ধরনের ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্য ঠিক করেছিল। এই ধড়পাকড়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা ভারতীয় গোয়েন্দাদের সতর্ক করেছে যে, হেফাজতের কিছু শীর্ষ নেতা এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে পালিয়েছেন বা পালানোর চেষ্টা করছেন বলে তাদের কাছে খবর আছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, আমরা বাংলাদেশের এই সতর্কতা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। কারণ এই ইসলামি কট্টরপন্থিরা পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে ঢুকে অনায়াসে স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। এ দুই রাজ্যের প্রশাসন ও পুলিশ সম্প্রতি সেখানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিকেই মনোনিবেশ করেছিল। তাই বাড়তি নজরদারি বাড়াতে ইতোমধ্যে আমরা রাজ্য পুলিশ ও বিএসএফকে সতর্ক করে দিয়েছি।
- আরও পড়ুন >> হেফাজত তান্ডব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া
খবরে আরও বলা হয়, গত সপ্তাহেও আসামে জঙ্গি দল জেএমবির দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। যদিও এখনো তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিকরাও আশঙ্কা করছেন যে, হেফাজত এবং অন্যান্য ইসলামি উগ্রপন্থিরা পালিয়ে প্রতিবেশী ভারতের রাজ্যগুলোতে গোপন ঘাঁটি গাড়তে পারে। যাতে পরে সেখান থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো যায়।
আওয়ামী মহিলা লীগের নেত্রী আয়েশা জামান শিমু বলেন, এমনকি বাংলাদেশেও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আশঙ্কা করছেন যে, কোনো কারণে ভারতে গেলে সেখানে তারা এসব কট্টরপন্থির দ্বারা হামলার শিকার হতে পারেন। আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই, বাংলাদেশ যেমন ভারতবিরোধী কোনো পক্ষকে এখানে আশ্রয় দেয়নি, তেমনি ভারতও বাংলাদেশের শত্রুদের তাদের দেশে আশ্রয় দেবে না। ধনী-গরিব, তরুণ-বুড়ো থেকে শুরু করে আমাদের অনেক মানুষ নানা কারণে ভারতে যান। এখানকার জিহাদিরা ভারতে আশ্রয় পেলে তা নিয়ে এই মানুষেরা খুব উদ্বিগ্ন হবেন।