বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ৪ জাতির জোট তথা কোয়াড্রিলেটেরাল সিকিউরিটি ডায়ালগ—কোয়াডে যোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে চীন। চীনবিরোধী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ওই জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষতি করবে।
ঢাকায় ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন-ডিক্যাবের আয়োজনে সোমবার এক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের কণ্ঠে এমন হুঁশিয়ারি আসে। কোয়াড নামে পরিচিত ওই জোটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রয়েছে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
ডিক্যাব সভাপতি পান্থ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনুদ্দিন মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। কোয়াড ছাড়াও তিস্তা নদীতে নাব্য ফেরাতে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একটি প্রকল্প ও বাংলাদেশে চীনের টিকা নিয়েও কথা বলেন রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
তিনি বলেন, একটি বিষয় আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোয়াডকে চীনবিরোধী এলিটদের একটি ছোট গোষ্ঠী বলেই মনে করে চীন। কোয়াড বলেছে, এটা অর্থনৈতিক জোট এবং কেবলমাত্র নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু এটা সত্য নয়।
লি জিমিং বলেন, আমরা জানি, কোয়াড বানানো হয়েছে চীনের কথা মাথায় রেখে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের পক্ষ থেকেও অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, চীনের কারণেই তারা এই জোটে অংশ নিচ্ছে। সুতরাং চার দেশের এই ছোট ক্লাবে যোগ দেওয়া বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু হবে না। কারণ এটা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মারাত্মক ক্ষতি করবে। আর সে কারণেই বাংলাদেশ এরকম কোনো জোটে চীন দেখতে চায় না।
তিস্তা নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার একটি প্রকল্পে তার দেশের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা নিয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পায়নি। আমরা যদি বাংলাদেশের দিক থেকে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রতিবেদন পাই, তাহলে আমাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আন্তরিকভাবে বিবেচনা করব।
চীনা দূত বলেন, কারণ আমি জানি, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরোধ আছে। কিন্তু আমি মনে করি, যৌথ নদীর ভাটিতে এই ধরনের প্রকল্প করা বাংলাদেশের জনগণের বৈধ অধিকার। যদি উজানে কোনো কাজ করতে হত, তাহলে ভাটির দেশের পক্ষ থেকে মতামত নিতে হত। যেহেতু আপনারা ভাটি এলাকায় আছেন, সেক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়ার মতো কোনো স্পর্শকাতর বিষয় এখানে দেখছি না।