১৪ দিনে ভারতফেরত ৩০৯ জন, ঝুঁকিতে আখাউড়া

বিশেষ প্রতিনিধি

ঝুঁকিতে আখাউড়া
সংগৃহীত ছবি

ভারতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। তবে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিরা আগরতলা থেকে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট বা অনাপত্তিপত্র নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন। বাংলাদেশে আটকেপড়া ভারতীয় নাগরিকেরাও বিশেষ অনুমতি নিয়ে ভারতে ফিরে যাচ্ছেন। রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ১৪ দিনে আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ৩০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকরা দেশে প্রবেশ করেছেন। এত বিপুলসংখ্যক লোক আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসায় করোনার সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়েছে আখাউড়া।

ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতফেরত নাগরিকদের হাসপাতাল এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর, আখাউড়া ও বিজয়নগর উপজেলায় ৫টি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ১২২ জনকে রাখা হয়েছে। ১০০ জনকে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে প্রেরণ করা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে কর্মরত ১৪ ভারতীয়কে দূতাবাসাতে পাঠানো হয়েছে এবং সশস্ত্রবাহিনীর ৩৩ জন সদস্যকে সিএমএইচএ-এ পাঠানো হয়েছে।

universel cardiac hospital

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. রাশেদুর রহমান বলেন, ভারত থেকে বেশি লোক আসায় আমরা আখাউড়াবাসী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। পাশের দেশ ভারত থেকে যদি কেউ করোনা সংক্রমিত হয়ে আসে তাহলে আমাদের জন্য খুবই দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে।

উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া পৌরশহরের সড়ক বাজারে নাইন স্টার হোটেলে রবিবার পর্যন্ত ১৩ জন এবং রজনী গন্ধা হোটেলে ৯ জন কোয়ারেন্টাইনে আছে। কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি দেখভাল করার জন্য আখাউড়ায় জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রয়েছেন।

এ অবস্থায় বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে সম্প্রতি (বৃহস্পতিবার) আখাউড়া স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান। পরিদর্শনকালে তিনি আখাউড়া ইমিগ্রেশন অফিস ঘুরে দেখেন।

এসময় জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান বলেন, সম্প্রতি সময়ে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ভারত থেকে যাত্রী প্রবেশের হার বেড়েছে। এ অবস্থায় ভারতফেরত যাত্রীদের বর্তমানে জেলার বিজয়নগর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে। ভারত থেকে ফেরা নাগরিকদের সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে, তাহলে পাশের জেলায় কোয়ারেন্টাইনে রাখার চিন্তা করতে হবে।

আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এমনিতেই আমরা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছি। তার মধ্যে ভারতফেরত নাগরিকরা আখাউড়ায় থাকায় একটু বেশিই ঝুঁকি রয়েছে। ভারত থেকে কেউ যদি করোনা সংক্রমিত হয়ে আসে, তাহলে আমাদের জন্য ঝুঁকির কারণ আছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-আলম বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে যারা ভারতে আটকা পড়েছেন তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে তাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এছাড়া যারা গুরুতর অসুস্থ তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। যারা কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন তাদের পাসপোর্ট আমরা সংরক্ষণ করছি। কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়ার ছাড়পত্র প্রদর্শন করার পর তাদের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন