নিজেদের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার পাঁচ লাখ ডোজ বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিচ্ছে চীন। সেই টিকা প্রস্তুতের পর ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পথে রওয়ানা করেছে। আগামীকাল বুধবার নাগাদ টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে।
ঢাকায় চীনা দূতাবাসের এক বার্তায় বলা হয়, সিনোফার্ম কোম্পানি উপহার পাঠানোর জন্য পাঁচ লাখ টিকার প্যাকেজিং শেষ করেছে। এই টিকাগুলো বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পথে যাত্রা করেছে। এই টিকা এমন ট্রাকে বহন করা হচ্ছে যাতে টিকাগুলো ঠান্ডা রাখা যায়।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালং ইয়ানও তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে জানান, বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য চীনের টিকাগুলো প্রস্তুত। বর্তমানে টিকাগুলো বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রয়েছে।
এর আগে সোমবার দুপুরে ঢাকায় এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং পাঁচ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন্।
গত ৩ মে স্বাস্থমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক বলেছিলেন ১০ মে’র মধ্যে চীন থেকে টিকা আসবে। কিন্তু রাষ্ট্রদূতের তথ্য অনুযায়ী আরও দুদিন অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীনের টিকার চাহিদা অনেক দেশের আছে। তাই বাণিজ্যিকভাবে যেটা বাংলাদেশ পেতে চায়, সেই টিকা পেতে বাংলাদেশের সময় লাগবে।
চীনের কয়েকটি টিকার মধ্যে বাংলাদেশ শুধু সিনোফার্মের টিকার জরুরি অনুমোদন দিয়েছে জনিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাণিজ্যিকভাবে টিকা পেতে বাংলাদেশ ৩০ এপ্রিল প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ আগেই অনুমতি দিলে চীনের টিকা আগে পেত।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘চীনের উপহারের টিকার জন্য বাংলাদেশকে ৩ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। অথচ এই অনুমোদনের জন্য দীর্ঘ তিন মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে।
করোনা মহামারি মোকাবেলায় সরকার দেশের ১৩ কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়। সেই লক্ষ্যে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে চুক্তি করে সরকার, যা দেশে এনে দেবে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসার কথা ছিল। তবে জানুয়ারিতে প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ, ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চালানে ২০ লাখ ডোজ মিলিয়ে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে আরও ৩২ লাখ ডোজ টিকা।
ভারতে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশটি টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ফলে বাংলাদেশের কেনা বাকি দুই কোটি ৩০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক-ভির’ এবং চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।