মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ঢাকামুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। ঈদের ছুটি শেষে খুলছে অফিস-আদালত। এ জন্য কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছে ঈদ ফেরত মানুষ।
জানা গেছে, সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি গেছেন। ঈদের আগেও পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে ঘরমুখী মানুষ গাদাগাদি করে নৌপথ পারাপার হয়েছে।
একই চিত্র দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রত্যেকটি ফেরিতে। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের বাড়িতে যাওয়া এবং ঈদ শেষে রাজধানী ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরার কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১৬ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে পাটুরিয়া এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাটুরিয়ার ৩ নং ঘাট পন্টুনে যানবানহন ও বেশ কিছু যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে আসা শাপলা শালুক নামের ফেরি নোঙর করে। ফেরির র্যাম খোলার সঙ্গে সঙ্গে ফেরি থেকে হুমড়ি খেয়ে নামে ঢাকামুখী যাত্রী।
এরপর সাড়ে ১০টার দিকে শাহ আলী নামে আরেকটি রো রো ফেরি ভিড়ে। তবে কোনো ফেরিতেই যাত্রীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। ফেরিতে গাদাগাদি করেই নৌপথ পারাপার হচ্ছে ঢাকামুখী এসব যাত্রী। এদিকে ঈদের তৃতীয় দিনেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক মানুষকে পাটুরিয়া ফেরিঘাট পার হয়ে বাড়িতে ফিরতে দেখা গেছে।
ঢাকামুখী যাত্রী সায়েম মোল্লা বলেন, বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া গিয়েছিলাম। ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আজ থেকে অফিস খোলা। কুষ্টিয়া থেকে ভেঙে ভেঙে দৌলতদিয়া আসতে ৫০০ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এখন পাটুরিয়া থেকে ৪০০ টাকায় একটি প্রাইভেটকারে উঠেছি।
মহসিন খান নামে আরেক যাত্রী বলেন, খুব দ্রুত ফেরি পারাপার হতে পেরেছি। তবে সড়কে ভোগান্তির পরিমাণটা অনেক বেশি। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় আমাদের মতো যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছাতে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি টাকা।
স্থানীয় বাসচালক ইয়াছিন মিয়া বলেন, পাটুরিয়া ঘাট থেকে বারবাড়িয়া পর্যন্ত যাত্রী প্রতি নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা ভাড়া। বাসে ৪০ জন যাত্রী নেওয়া যায়। তবে যাত্রী নিয়ে গাবতলী যেতে পারলে আমাগো আয় রোজগার ভালো হইতো।
ঢাকামুখী প্রাইভেটকার চালক শব্দর হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে তিনজন যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে আসছি ১০০০ টাকায়। পাটুরিয়া থেকে ৫০০ টাকা করে ভাড়ায় গাবতলী যাওয়ার জন্য চারজন যাত্রী তুলছি। তবে মহাসড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচল করা খুব কষ্টকর। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেক পোস্টে পড়তে হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান মত ও পথকে বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ ফেরত যানবাহন ও যাত্রীরা ঘাটে এসে ফেরিতে উঠতে পারছে। যে কারণে নৌপথ পারাপারে যানবানহন ও যাত্রীদের ভোগান্তি নেই।