প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ৬ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিবের মামলায় কারাগারে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। সচিবালয়ের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক, অনাকাঙ্খিত এবং অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি লেখেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নয়, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে দেশ-জাতি উপকৃত হবে ।
সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটে এ পোস্ট করেন তিনি। এতে হাজার হাজার লাইক পড়ছে। পোস্টটি শেয়ার করেছেন শত শত মানুষ। আর সেই সঙ্গে অনেকেই নানা মন্তব্য করেছেন।
ওই পোস্টে কমেন্ট করেছেন জিটিভির সিনিয়র কর্মকর্তা অঞ্জন রায়। কমেন্টে তিনি হানিফের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তিনি লিখেছেন, মাহবুবউল আলম হানিফ ভাই, শতভাগ একমত আপনার বক্তব্যের সাথে।
পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব আলম হানিফ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার নিন্দা জানান। ওই ঘটনাকে দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেন। বলেন, এই ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তি বিশেষের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। আমরা চাই প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় স্বচ্ছভাবে কাজ করুক, প্রধানমন্ত্রীর যে চিন্তা চেতনা দেশের জন্য যে পরিকল্পনা সেটা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাক। দেশ এগিয়ে যাক, সরকারের ইমেজ আরও উজ্জ্বল হোক।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি নথি চুরি এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে দায়ের করা মামলায় রোজিনা ইসলামকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। পরে তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিক রোজিনাকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার। অপরদিকে তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন। আর জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
সোমবার পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে সরকারি নথি চুরির অভিযোগ এনে তাকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রাখা হয়। রাত ৮টার দিকে লিখিত অভিযোগসহ শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে এই সাংবাদিককে তুলে দেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। পরে রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় আনা হয়।
রাতেই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব ডা. শিব্বির আহমেদ উসমানী বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া মোবাইল ফোনে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তোলা এবং আরও কিছু নথি লুকিয়ে রাখার অভিযোগ এনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।