সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারলাম যে, হেফাজতি নেতাদের ব্যাংক হিসাব এবং আয়-ব্যয়ের হিসাবাদি তথা তাদের অর্থ প্রাপ্তির উৎস ও ব্যয়ের খাত তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। খবরটি সত্য হয়ে থাকলে স্বস্তিদায়ক। বড় বড় কওমি মাদ্রাসায় যা আয় হয়, তা বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি বৈ কম নয়। একই সাথে হেলিকপ্টার ওয়াজি-দের অনেকের ব্যক্তিগত আয় অনেক বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের চেয়ে অনেক বেশি। অনেক পীর সাহেবদের আয়ের কোনো হিসাব নেই। তাদেরও আয় এভারেজ মানের ব্যবসায়ীদের থেকে অনেক বেশি। এইসব ব্যক্তিবর্গের কয়জন ইনকাম ট্যাক্স দেন বা দিলেও সঠিক হিসেব দেন কি না, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। শুধু দুদক নয়, বোর্ড অব রেভিনিউ থেকেও উদ্যোগ প্রয়োজন।
বসুন্ধরা, হাটহাজারী, লালবাগ, কামরাঙ্গির চর, মোহাম্মদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ ইত্যাদি স্থানে গড়ে উঠা মাদ্রাসা সমূহের আয়ের উৎস ও ব্যয়ের খাত জনসম্মুখে তুলে ধরা মাদ্রাসাগুলির এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। সম্প্রতি জামেয়া ইউনুসিয়ায় শতবর্ষ উদযাপন হয়েছে প্রতিষ্ঠার। এতে কোটি কোটি টাকা আয়-ব্যয় হয়েছে। কিন্তু কোনো হিসেব নেই। অনুরূপ জামেয়া দারুল আকরাম বা কাতারি মাদ্রাসায় দেশি-বিদেশি সূত্র থেকে অনেক টাকা-পয়সা এসে থাকে। এসবের কোনো হিসেব নেই। এই মাদ্রাসাগুলির বড় বড় তথাকথিত উদ্বাস্তুদের ব্যক্তিগত ইনকাম নিয়েও স্বচ্ছতা নেই। কেউ কেউ সুদে-আসলের ভিত্তিতে এলাকায় টাকাও লাগিয়ে থাকেন। এসবের বৈধতা প্রশ্নের সম্মুখীন। মাদ্রাসায় আত্মীয়স্বজনের একচ্ছত্র আধিপত্যেও মানুষের জিজ্ঞাসা আছে।
সুতরাং আমরা মনে করি, শুধু বাবুনগরীর, সাজিদুর, মোবারক উল্লাহ বা জুনায়েদ হাবিবদের ব্যক্তিগত আয়-ব্যয় নয়, এদের সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাগুলোর আয়-ব্যয় পরিচালনা নিয়ে সরকারি অনুসন্ধান চালানোও জরুরি। প্রয়োজনে কমিশন গঠনের ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস এবং সংবিধানের প্রশ্নে কোনো আপোস নয়।