দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সক্ষমতা বিশ্বে সমাদৃত: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দুর্যোগ মোকাবেলায় যে সক্ষমতা তা আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। যে কারণে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্লোবাল এডাপটেশন সেন্টারের কার্যালয় বাংলাদেশে স্থাপন করা হয়েছে। এত ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও একটা ছোট ভৌগোলিক সীমারেখায় বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়েও প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেও আমরা মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারছি।

রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম-কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র ও পাঁচটি মুজিব কিল্লার উদ্বোধন এবং ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় সরকার প্রধান বলেন, আমাদের ওপর দায়িত্ব পড়েছে এখন সারা বিশ্বে কীভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করা যেতে পারে তার পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন করা, মনিটরিং করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে আসে। এটা নিয়ে কাজ করার জন্য গ্লোবাল এডাপটেশন সেন্টারের কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে দুর্যোগ মোকাবেলার একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখে। এটার জন্য, জনগণের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক বলে আমরা মনে করি।

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সতর্ক করছি আরেকটা ঘূর্ণিঝড় কিন্তু আসছে। সেটা কেবল তৈরি হচ্ছে, কতদূর যাবে এখন আধুনিক প্রযুক্তির কারণে আমরা অনেক আগে থেকে জানতে পারি। সেই বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা আমরা নিতে শুরু করেছি। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় সকলে সতর্ক থাকবেন, সচেতন থাকবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এখন একটা দুর্যোগ মোকাবেলা করছি, যেটায় আজকে সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে আছে। সেটা হচ্ছে করোনাভাইরাস। এই করোনাভাইরাস মানুষের জীবন যাত্রাকে ব্যাহত করছে। কত আপনজনকে আমাদের হারাতে হলো, কত মানুষের মৃত্যু আজকে আমাদের দেখতে হলো। এটা সত্যি খুব দুঃখজনক। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, প্রত্যেকে আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা জানি কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি সেই কষ্টটা লাঘব করতে। তারপরও সকলের সহযোগিতা চাই, আপনারা যদি সুরক্ষিত থাকেন। আপনি নিজে শুধু সুরক্ষিত থাকছেন না, আপনারা আশপাশের পরিবার তাদেরকে সুরক্ষিত করছেন। এই কথাটা মনে রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আপনারা চলবেন। মাস্ক পরা, এমনকি যারা টিকা নিয়েছেন তাদেরকেও আমি বলবো মাস্ক পরা। নিজের বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। আমরা যেন এই দুর্যোগটাও মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে পারি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য কাজ করছে। এই কাজের মধ্য দিয়ে দেশকে উন্নয়নশীল দেশে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান দেয়ারও ব্যবস্থা করছি। সেমি পাকাঘর ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম ঘর করে দিচ্ছি। দুর্যোগকালীন মানুষের কাছে দ্রুত খাদ্য পৌঁছাতে ত্রাণগুদামের ব্যবস্থা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি, এটি একটি বদ্বীপ। প্রতিনিয়ত দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও আসে। সবই মোকাবিলা করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আসলেই আমাদের দাবিয়ে রাখা যায়নি। যাবেও না। আমরা সব দুর্যোগ-সংকট মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই শুধু এই দক্ষিণ এশিয়ায় নয়। সারা বিশ্বে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। জাতির পিতা এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই স্বাধীন দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো।

শেয়ার করুন