৪ দফা দাবিতে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

হাবিপ্রবি প্রতিবেদক

হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
সংগৃহীত ছবি

সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে সারাদেশের মতো মানববন্ধন করেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২৪ মে) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে তারা এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা শিগগির বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মো. ফজরুল হকের মাধ্যমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার বরাবর স্বারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে তারা চারটি দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো-

universel cardiac hospital

স্বাস্থ্যবিধি মেনে আটকে থাকা সকল সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্বশরীরে গ্রহণ করা, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হল খুলে দেওয়া, দ্রুত শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা এবং সেশনজটের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মামুন বলেন, গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। আমাদের জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। লকডাউনে যানবাহনসহ সবকিছু চললেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফারজানা ফাইজা মুস্তারী বলেন, আমাদের অনলাইনে দুইটি সেমিস্টার শেষ হয়েছে। কিন্তু কোনো পরীক্ষা হয়নি। এতে দুইটা সেমিস্টারের পড়া একসঙ্গে চালানো অসম্ভব এবং কষ্টদায়ক। অবিলম্বে স্বশরীরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়া হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য ড. বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা প্রজ্ঞাপন দিলেই আমরা অল্প সময়ের মাঝে ডীন কমিটির মিটিংয়ে বসে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারব। মন্ত্রণালয় যদি স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করে তবে সেভাবে নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান তারা যেন লেখাপড়ার মধ্যেই থাকে।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, আমরা গত সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করবে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের একাডেমিক কাউন্সিল ডেকে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজতর হবে। তবে করোনা সংক্রমণ ৫% এর নিচে না নামা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা স্বশরীরে পরীক্ষা দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।

অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিবেচনায় কিভাবে পরীক্ষাসমূহ নেওয়া যায় সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট কিনতে পারে (২০০ টাকার বিনিময়ে ৩০ জিবি ইন্টারনেট) সে ব্যাপারে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। মূলত গত বছর এপ্রিলে ১৯০০ শিক্ষার্থী ও ৭০০ শিক্ষকের ওপর জরিপ চালিয়ে আমরা সার্বিক বিষয়ে সকল সমস্যা জানার চেষ্টা করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতেই মূলত শিক্ষার্থীদের সফটলোন দেওয়া হয়।

তিনি শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনার ব্যাপারে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছি যাতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার জন্য ১০ লাখ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তবে সম্প্রতি যে ভ্যাকসিন দেশে আসতেছে সেগুলো মেডিকেলের ছাত্রদের দেওয়া হবে বলে জানতে পেরেছি। তবে এরপর কোনো ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা যাতে পায় সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালাব।

শেয়ার করুন