ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা
ফাইল ছবি

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাম্প্রতিক যুদ্ধে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ তদন্ত করবে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ। বৃহস্পতিবার এক বিশেষ অধিবেশনে এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে তারা।

এদিন ৪৭ সদস্যের পরিষদে ওই প্রস্তাবের পক্ষে ২৪ ও বিপক্ষে নয়টি ভোট পড়ে, আর ভোটদানে বিরত থাকে বাকি ১৪টি দেশ।

universel cardiac hospital

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাবটি তোলা হয়।

এতে বলা হয়েছিল, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর ও পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের ‘নিয়মতান্ত্রিক’ যুদ্ধাপরাধ তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ যেন অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক কমিটি গঠন করে।

ইসরায়েলে জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের এই কমিটিকে যুদ্ধাপরাধ তদন্তে কোনো ধরনের সহযোগিতা করবে না। দখলদারদের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের এই সিদ্ধান্তে ‘গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ’ করছে। তাদের কথায়, এতদিন যে ‘অগ্রগতি’ হয়েছে তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে এই পদক্ষেপ।

গত ৭ মে পবিত্র মাহে রমজানের শেষ শুক্রবার বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি মুসল্লি আল-আকসা মসজিদে সমবেত হলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালায়। মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বর্বর ইসরায়েলিরা। এর দুদিন পরে পবিত্র শবে কদরেও আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে মুসল্লিদের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়।

গত ১০ মে থেকে অবরুদ্ধ উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারাও রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তীব্র প্রতিরোধের মুখে অবশেষে গত ২০ মে যুদ্ধবিরতি মানতে বাধ্য হয় দখলদার ইসরায়েল। এতে মধ্যস্থতা করেছে মিসর।

টানা ১১ দিনের এই সহিংসতায় ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে অন্তত ২৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন, এদের মধ্যে ৬৬ শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার বেসামরিক মানুষ। আর ফিলিস্তিনিদের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে মারা গেছেন ১২ জন।

ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানি হিসাব করলে ফিলিস্তিনিদের ক্ষয়ক্ষতি কয়েকগুণ বেশি হলেও পশ্চিমা মদদপুষ্ট ইসরায়েলি বাহিনীকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করা হামাসের জন্য বিজয়ের সামিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র: আল জাজিরা, পার্স টুডে

শেয়ার করুন