কিশোরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জে বাবা-ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। এছাড়া কুড়িগ্রামে মামা-ভাগ্নে মারা গেছেন।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তিনটি দুর্ঘটনায় এই ছয়জনের মৃত্যু হয়।
আমাদের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা-ছেলেসহ একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার কর্শাকড়িয়াল ইউনিয়নের জালিয়াপাড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- জালিয়াপাড়ার হারুন অর রশিদ (৪৫) ও তার ছেলে বাবলু (১৮) এবং হারুন অর রশিদের ভাতিজা বুরহান উদ্দিনের ছেলে শাদ (১০)।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেন।
কর্শাকড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বদর উদ্দিন জানান, বিদ্যুৎ লাইন থেকে একটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎসংযোগ নেয়া হয়েছে। ওই বাঁশের খুঁটিতে শাদ তার বাইসাইকেলটি রাখে। দুপুর আড়াইটার দিকে শাদ বাইসাইকেল আনতে গেলে প্রথমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে বাবলু ও হারুন অর রশিদ তাকে বাঁচাতে গেলে তিনজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ভৈরবে আম পাড়তে গিয়ে শ্রমিক নিহত
এদিকে আমাদের ভৈরব প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গাছ থেকে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. সজিব (২৭) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানার নোয়াপাড়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন মিল শ্রমিক।
শুক্রবার ভোরে ভৈরবের বঙ্গবন্ধু সরণি এলাকার মুজিবর রি-রোলিং কারখানা সংলগ্ন স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন জানান, দুর্ঘটনার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
কুড়িগ্রামে বিদ্যুতায়িত হয়ে মামা-ভাগ্নে নিহত
এদিকে আমাদের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের নগরপাড়া গ্রামে শুক্রবার দুপুরে বৈদ্যুতিক মেরামতের কাজ করতে গিয়ে তৈয়ব আলী (৪৫) ও হাকিম উদ্দিন (৫৫) নামে দুই ব্যক্তি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তৈয়ব আলীর স্ত্রী জামেনা বেগম (৪০)। নিহত দুজন আপন মামা ও ভাগ্নে।
থেরাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুৎতের সরবরাহ লাইন বন্ধ থাকার সুবাদে মামা তৈয়ব আলী ও ভাগ্নে হাকিম উদ্দিন তৈয়ব আলীর বাড়িতে অবস্থিত বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ লাইনে মেরামত কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে এলে দুজনেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে।
এসময় তাদেরকে বাঁচাতে তৈয়ব আলীর স্ত্রী জামেনা বেগম এগিয়ে এলে তিনিও বিদ্যুৎতায়িত হন। পরে স্থানীয়রা তিনজনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তৈয়ব আলী ও হাকিম উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত তৈয়ব আলী ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে এবং হাকিম উদ্দিন মৃত ইসলামের ছেলে। তারা দুজনেই পাশাপাশি বাড়িতে থাকেন। গুরুতর আহত জামেনা বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাঈদুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুরে তিনজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এদের মধ্যে দুজনের আগেই মৃত্যু হয়েছে। অপর আহত রোগী জামেনা বেগমের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ কবির জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।