পারিবারিক কলহ, যৌতুকের টাকা না পাওয়া ও দ্বিতীয় বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় শাহানা আক্তার (২৬) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী লালন মিয়ার (৩৬) বিরুদ্ধে। শাহানা নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
আজ বুধবার ভোরে জেলার কলমাকান্দা উপজেলার কাঞ্চনপুরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লালন মিয়াকে আটক করেছে।
লালন মিয়া সদর ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত আবদুর রহিমের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। এ ছাড়া রাজমিস্ত্রির কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
শাহানার বাবা ফুল মিয়া বলেন, আমার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েডারে লালন মেরে ফেলছে। সে শাহানাকে হত্যা করে আমাকে ভোররাতে কল দিয়ে বলে, “মেয়েকে শেষ দেখা দেখে যান।” এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১১ বছর আগে লালন মিয়ার সঙ্গে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর এলাকার বাসিন্দা ফুল মিয়ার মেয়ে শাহানা আক্তারের বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে।
দুই বছর আগে লালন ব্যবসার কথা বলে শাহানাকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে কিছু টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। পরে তিনি সেখান থেকে ২০ হাজার টাকা এনে দেন। এরপর আবারও টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু শাহানা এতে আর রাজি হননি।
দুই মাস আগে লালন শাহানাকে না জানিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ চলছিল।
আজ বুধবার ভোররাত পৌনে চারটার দিকে লালন মিয়া শাহানার বাবা ফুল মিয়াকে মুঠোফোনে কল করে জানান, শাহানাকে শেষ দেখা দেখতে চাইলে দ্রুত যেন কাঞ্চনপুর চলে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে ফুল মিয়া কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) কল করে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাহানার শোয়ার ঘরে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লালন সটকে পড়লেও পরে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়। শাহানার মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম মাহমুদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে শাহানাকে তাঁর স্বামী লালন মিয়া শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। মৃতদেহে এর কিছু চিহ্ন মিলেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। এ নিয়ে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।