আমাজন-গুগলকে করের আওতায় আনতে ঐতিহাসিক চুক্তি

ডেস্ক রিপোর্ট

আমাজন-গুগল

আমাজন, গুগলের মতো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে বিশ্বব্যাপী করের আওতায় আনতে ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছেছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-৭।এখন থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর বিশ্বের সর্বত্র ন্যূনতম ১৫ শতাংশ করপোরেট কর নির্ধারণের লক্ষ্যে জি–৭–এর অর্থমন্ত্রীরা একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

লন্ডনে জি-৭-এর অর্থমন্ত্রীদের দুই দিনের বৈঠক শেষে শনিবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আমাজন ও গুগলের মতো টেক জায়ান্ট কোম্পানিগুলোও নতুন এই করের আওতায় আসবে। কোম্পানিগুলো যেসব দেশে ব্যবসা করে, সেসব দেশেও যাতে তারা কর দিতে বাধ্য হয়, সেই পথ তৈরির কথাও বলা হয়েছে এই চুক্তিতে।

চলতি সপ্তাহেই খবর প্রকাশ হয়েছে যে আয়ারল্যান্ডে মাইক্রোসফটের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান গত বছর ৩১৫ বিলিয়ন মুনাফার বিপরীতে কোনো করপোরেট কর দেয়নি। কোম্পানিটিকে বারমুডাভিত্তিক দেখিয়ে কর ফাঁকির সুযোগ তৈরি করা হয়।

জি–৭–এর সদস্যদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ইতালি ও জাপান এই চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এসব দেশের সরকারের হাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আসতে পারে, যা দিয়ে তারা মহামারি মোকাবিলায় ব্যয় সংকুলানের নতুন পথ পাবে।

বেশ কয়েক বছর ধরে আলোচনার পর এই চুক্তিতে মতৈক্যে পৌঁছেছে দেশগুলো। এখন অন্যান্য দেশও যাতে এই পথ অবলম্বন করে, সে জন্য তাদের ওপর চাপ তৈরি হবে। আগামী মাসে জি-২০-এর বৈঠকেই বিষয়টি আলোচনায় উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী রিশি সুনাক বলেছেন, চুক্তিটি এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে বিশ্বজুড়ে ব্যবসা রয়েছে, এমন কোম্পানিগুলোর জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হয়।

রিশি সুনাক বলেন, বৈশ্বিক ট্যাক্স ব্যবস্থা ডিজিটাল বিশ্বের এই যুগের উপযোগী করে তুলতে কয়েক বছরের আলোচনার পর জি–৭ অর্থমন্ত্রীরা একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছেছেন।

বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে আসা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর কর আরোপ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ছিল দেশগুলো।

আমাজন ও ফেসবুকের মতো প্রযুক্তি করপোরেশনগুলোর বিস্তৃতিতে এই চ্যালেঞ্জে আরও বাড়ছিল।

এখন কোম্পানিগুলো যেসব দেশে তুলনামূলক কম করপোরেট কর রয়েছে, সেসব দেশে স্থানীয় শাখা খুলতে পারে এবং সেখানে মুনাফা ঘোষণা করতে পারে। অর্থাৎ, সেখানে তাদের শুধু স্থানীয় হারে কর দিয়ে গেলেই চলে। এমনকি সেখানে উৎপাদিত পণ্য অন্য কোনো দেশে বিক্রি করে এই অর্থ এলেও তারা তা করতে পারে। বৈধভাবেই কোম্পানিগুলো এই সুবিধা নিচ্ছে।

চুক্তিতে দুইভাবে এটা বন্ধ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথমত, জি-৭ চাইছে সারা বিশ্বে এসব কোম্পানির জন্য একটি ন্যূনতম করহার নির্ধারণ করা হোক। দ্বিতীয়ত, কোম্পানিগুলো যেসব দেশে তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করবে, সেসব দেশে তাদের কর দিতে হবে।

শেয়ার করুন