চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট সংসদে পাস হয়েছে। যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তাদের মূল বরাদ্দের থেকে অতিরিক্ত খরচ করেছে, সেটার অনুমোদন নিতেই এই বাজেট পাস হয়। অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১’ সোমবার (৭ জুন) সংসদে উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
এর আগে সরকারি, বিরোধী দল ও বিএনপির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য গত দুই দিন সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন।
এদিকে সোমবার পাসের সময় সম্পূরক বাজেটের ওপর বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের ১১ জন সংসদ সদস্য ১৯০টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। তবে সেগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়।
ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন— জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, মোশারফ হোসেন, গণফেরামের মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ১৯টি মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূরক বাজেটটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ৬২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের অনুকূলে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধিত বাজেটে ১৯টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৪৩টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ৪২ হাজার ৪৮১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা হ্রাস পেয়েছে।
সার্বিকভাবে ২৯ হাজার ১৭ কোটি টাকা হ্রাস পেয়ে সংশোধিত নিট বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।
সম্পূরক বাজেটে স্থানীয় সরকার বিভাগ সর্বোচ্চ দুই হাজার ৮৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। ১২৬টি চলমান এবং ৩১টি নতুন প্রকল্পে অর্থের সংস্থানের করায়— এ অতিরিক্ত বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আর সবচেয়ে কম ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা কম বরাদ্দ পেয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। এ বিভাগের ১২টি চলমান প্রকল্পের অর্থের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দরকার।
গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের সাধারণ বাজেট পেশ হয়। একই সঙ্গে পেশ হয় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট।
২০২০-২১ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। মহামারির সংকটে সেই গতিপথ ঠিক থাকেনি। সংশোধনে তা ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে সরকারের আগামী এক বছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দিয়েছেন, যা ৩০ জুন পাস হওয়ার কথা।
সম্পূরক বিল পাস হওয়ার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন।