বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই নির্বাচন বয়কটের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
৭ মার্চ, ৭ জুনের মতো ঐতিহাসিক দিবসগুলো পালন না করায় বিএনপি সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে তাদের আস্থার অভাব রয়েছে।
সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে গণমাধ্যমের কাছে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) যে নির্বাচন বয়কট করেছে… অথচ ’৭০ সালে বঙ্গবন্ধু লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের আন্ডারে কিন্তু নির্বাচন করেছে। একটা শর্ত ছিলো, বাধন ছিলো। অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল এই নির্বাচন করে কি হবে? কিন্তু বঙ্গবন্ধু জানতেন নির্বাচনে একমাত্রই পথ স্বাধীনতা। নির্বাচন করার পরেই বঙ্গবন্ধু যে ম্যান্ডেড পেয়েছিল, সেটাই তাকে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষক হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কাজেই এই কথাটি সত্য, আজকে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তারাই নির্বাচন বয়কট করেছে।
ঐতিহাসিক ৬-দফার মতো দিবসগুলো পালন না করায় বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতাকে অস্বীকার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে তাদের আস্থার অভাব রয়েছে। স্বাধীনতার চেতনায় যদি তারা বিশ্বাসী হতো, তাহলে ৭ মার্চ, ৭ জুন-এই দিবসগুলোর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা থাকতো এবং পালন করতো।
৬ দফার গুরুত্ব তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের মহান স্বাধীনতার পথে, স্বাধিকার সংগ্রামের বাক পরির্তনকারী ঐতিহাসিক মাইলফলক ৭ জুন। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির তৎকালীন বাংলার কেন্দ্রাতীত শক্তি, আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে এই ৬ দফা প্রস্তাব ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশে এসে ৬ দফা দাবির পক্ষে তিনি প্রচার শুরু করেন। এ সময় বাংলাদেশে ম্যাগনাকার্টা বলে পরিচিত ৬ দফা হচ্ছে বাঙালির মুক্তির সনদ।
৬ দফা সংগ্রামের মধ্য দিয়েই বাংলার স্বাধিকার সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রামে রুপান্তরিত হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এরপর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৫ দফা ভিত্তি, ১১ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে বিস্ফোরিত বাংলাদেশ, তারপর বঙ্গবন্ধুর মুক্তি, ’৭০ এর নির্বাচন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ; এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কাজেই ৭ জুন আমাদের স্বাধীকার সংগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটাকে বাক পরিবর্তনকারী মাইলফলক বলে আমরা চিহ্নিত করতে পারি।’
ঐতিহাসিক এই দিনে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার শপথ নেয়ার কথা জানিয়ে কাদের বলেন, ‘৬ দফার লক্ষ্যের একটি ছিলো বাঙালির স্বাধীনতা, আরেকটি হলো মুক্তি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, বিজয় অর্জন করেছি।’
এখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মুক্তির সংগ্রাম করছি। উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিমুখে নবযাত্রার সূচনা আমরা করেছি। ৭ জুনের শপথ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য।’
এর আগে ঐতিহাসিক ৬-দফা দিবস (৭ জুন) উপলক্ষে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ওবায়দুল কাদের।
তার সঙ্গে ছিলেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
পরে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, মৎসজীবী লীগের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান নেতাকর্মীরা।