নাব্য নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে নদীর রক্ষণাবেক্ষণে ড্রেজিং পরিচালনার ওপর আবারও জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পানির স্বাভাবিক প্রবাহের ক্ষেত্রে কোনো অপ্রাকৃত বাধা যেন তৈরি না করতে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলেছেন সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর একনেক সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী পুষ্টিসম্পন্ন ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য জন্য আলু বীজ, শাকসবজি এবং অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে দেশে টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে চাষাবাদ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী ভোলা, পটুয়াখালী ও বগুড়ার মতো এলাকা যেখানে ফসল বেশি উৎপাদন হয় সেখানে সাইলো নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে বিপিএটিসির প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুই থেকে তিন মাসের পরিবর্তে ১০ মাসভিত্তিক কোর্স করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে এম এ মান্নান জানান, কোভিড-১৯ মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব নিরূপণে সরকার আরও একটি সমীক্ষা চালাবে।
চিলমারীতে নদীবন্দর প্রকল্পটি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে হচ্ছে ৩০টি সাইলো
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদি সম্বলিত আধুনিক মানের ৩০টি সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি ২২ লাখ টাকা। খাদ্য অধিদপ্তর জুলাই, ২০২১ থেকে ডিসেম্বও ২০২৩ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক মানের সাইলো নির্মাণের লক্ষ্যে যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে, এর আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩০টি সাইলো নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২৪ জেলায় ৩০টি উপজেলায় ৩০টি সাইলো নির্মাণ হবে। এতে আগামী তিন বছরের মধ্যে সরকারি খাদ্য ব্যবস্থাপনা দেড় লাখ টন ধারণ ক্ষমতায় উন্নীত হবে। আধুনিক মানের সাইলো তৈরির ফলে সারা বছর কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের সুযোগ হবে। কৃষক সহজেই সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রয় করতে উৎসাহিত হবেন এবং উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে। অধিকন্তু, কীটনাশকবিহীন মজুদ ব্যবস্থার মাধ্যমে দুই থেকে তিন বছর শস্যের পুষ্টিমান বজায় রেখে খাদ্য মজুদ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকে ছয় হাজার ৬৫১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন পাঁচ হাজার ২১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকবে ৭৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক অর্থায়ন সহায়তা পাওয়া যাবে ৬৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।