পুলিশ হত্যা মামলার আসামি হেফাজত নেতাদের ‘তোয়াজ’ করে বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। তিনি বলেছেন, ‘হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হেফাজত নেতারা বসে কমিটি করে। সেই কমিটিতে যারা অন্তর্ভুক্ত হয়, তারা একজনও ভালো লোক হওয়ার কথা না। তারাও অনেকে অনেক মামলার আসামি। তাদেরকে তোয়াজ করছে রাষ্ট্রের যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে আছে, তারা। এরচেয়ে ন্যক্কার ও নিন্দাজনক আর কী হতে পারে?’
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল জিটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
- আরও পড়ুন >> এ বছরও হজে যেতে পারবেন না বাংলাদেশিরা
হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতা জুনায়েদ বাবুনগরীকে ‘ইডিয়ট’ উল্লেখ করে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, পুলিশের বড় বড় কর্তাব্যক্তিরাও বলছেন, আহমদ শফীর হত্যাকারীদের একজন জুনায়েদ বাবুনগরী। অথচ রাষ্ট্রের যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে আছেন, তাদের সঙ্গেই বৈঠক করেন বাবুনগরী। তাহলে এখানে তো আইন বৈষম্যমূলক হয়ে গেল। আমার জন্য একরকম, সাধারণ মানুষের জন্য আরেক রকম, আর বাবুনগরীর জন্য আরেক রকম। একটা অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে আমরা আছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতের দুই শীর্ষ নেতা সাজিদুর রহমান ও মোবারক উল্লাহর বিরুদ্ধে তার নিজের দায়ের করা এজাহার মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, দেশের লাখ লাখ মানুষ দেখেছে এবং শুনেছে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার লোকেরা আমার বিরুদ্ধে কী বলেছে। আমার নেতৃত্বে নাকি ছাত্রলীগ-যুবলীগ মাদ্রাসায় হামলা চালিয়েছে। আমি নাকি পাখির মতো মানুষ মেরেছি। পাখির মতো যদি মেরে থাকে, তাহলে পুলিশ মেরেছে। আমি একজন এমপি, একজন দায়িত্বশীল মানুষ। আমি একটা মামলা করেছি, সেই মামলার এজহারে দেওয়া ফেসবুক লিংক নাকি সিআইডি খুঁজে পায় না। এখন আইন বৈষম্যমূলক হয়ে গেছে। আইন সবার জন্য সমান নয়।
তিনি আরও বলেন, সুঁদি ব্যবসায়ী সাজিদুর রহমান, মিথ্যাবাদী মোবারক উল্লাহরা কোনো দিন সংশোধন হবে না। কেননা তারা প্রত্যেকেই ধুরন্ধর ক্রিমিনাল।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সালের তাণ্ডবে শুধুমাত্র হিন্দু হওয়ার কারণে ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস ও এএসপি তাপস রঞ্জন ঘুষের চাকরি যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল এই জামিয়ার মোল্লাদের মিথ্যাচারের কারণে। তখন আমি তাদের জন্য ফাইট করে রক্ষা করেছি। এখন আমার নামে যদি মামলা থাকে বা কেউ দেয় আমাকেও গ্রেফতার করুন কিন্তু আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তান্ডবের মূল দুই হুতা সাজিদুর রহমান এবং মোবারক উল্লাহকে গ্রেফতার করুন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) আবু সাঈদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত প্রমুখ।