হেফাজতের তাণ্ডব: আড়াই মাস পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে থামতে যাচ্ছে ট্রেন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

রেলস্টেশন
হেফাজতের আগুনে পুড়ে ছাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন। ফাইল ছবি

অবশেষে ১২ সপ্তাহ পর হেফাজতের তাণ্ডবে অচল হয়ে পড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন আংশিক সচল হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ জুন থেকে এই রেলস্টেশনে মেইল, কমিউটার ও আন্তঃনগর মিলিয়ে মোট ১২টি ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে বলে জানা গেছে।

রোববার ঢাকা রেল ভবনের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন শাখার উপ-পরিচালক (অপারেশন) মো. রেজাউল হক স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, মঙ্গলবার থেকে এই স্টেশনে পাঁচ জোড়া মেইল/এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেন যথাক্রমে- নিম্ন ও ঊর্ধ্বগামী দুটি সুরমা মেইল, দুটি ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস, দুটি কর্ণফুলী কমিউটার ও ঢাকা-আখাউড়া পথে চলাচলকারী চারটি তিতাস কমিউটার ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে। পরদিন ১৬ জুন থেকে ঢাকা-সিলেট পথে চলাচলকারী নিম্ন ও ঊর্ধ্বগামী দুটি আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন ছিল ‘বি’ ক্লাসের মর্যাদার। হেফাজতের তাণ্ডবে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির কারণে স্টেশনটি মর্যাদা হারিয়ে ‘ডি’ ক্লাসে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় শুধু যাত্রী সুবিধা বিবেচনায় সাময়িকভাবে স্টেশনটিকে ‘ডি’ ক্লাস স্টেশনে রূপান্তরের মাধ্যমে চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন জানান, কাউন্টারে টিকিট বিক্রির দিক থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন সারাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আর যাত্রী যাতায়াতের সংখ্যার দিক থেকে সারাদেশে এই স্টেশনের অবস্থান তৃতীয়। প্রতিদিন আড়াই হাজারেরও বেশি যাত্রী এ স্টেশন থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন।

উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সংঘর্ষের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা পেট্রোল-ডিজেল দিয়ে প্রথমে রেলস্টেশনের কন্ট্রোল প্যানেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এরপর তারা স্টেশনের টিকিট কাউন্টার, প্রধান বুকিং সহকারীর কক্ষ, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশ্রামাগারসহ সাতটি কক্ষে আগুন দিয়ে সবকিছু পুড়িয়ে ফেলে। তারা যাত্রীদের বসার চেয়ারসহ সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্লাটফর্মের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তারা রেলস্টেশন ও রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে পাটাতন ফেলে রেললাইন অবরোধ করে এবং রেললাইনের পাশে স্তূপ করে রাখা কাঠের স্লিপার লাইনের ওপর এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে স্টেশনের সিগন্যাল সিস্টেম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় পরদিন ২৭ মার্চ থেকে এই স্টেশনে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

শেয়ার করুন