গত কয়েকদিন ধরে দেশে করোনাভাইরাসে দৈনিক মৃত্যু ও শনাক্ত বাড়ছে। এ ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ৪৭ জন, যা পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সবশেষ গত ৯ মে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৬ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়। তার আগেরদিন ৯ মে মৃত্যু ছিল ৪৫ জনের। এরপর মৃত্যুর সংখ্যা ৪৫ পেরোয়নি।
এদিকে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি দেশে বেড়েছে করোনা শনাক্তের সংখ্যাও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানাচ্ছে গত একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩৬ জন।
আজ রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৭৪৯টি নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৪৩৬ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৮ লাখ ২৬ হাজার ৯২২ জন। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন ও নারী ১৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ২১ থেকৈ ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন ও ষাটোর্ধ্ব ২৯ জন রয়েছেন।
গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৪২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৬৬ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা হয়।
এরমধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।