কক্সবাজারে ১৩ জন রোহিঙ্গাকে জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট প্রদানে জড়িত থাকার দায়ে ৩ পুলিশ পরিদর্শকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- কুমিল্লার অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হোসেন, পটুয়াখালী জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) এস এম মিজানুর রহমান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রুহুল আমিন ও রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি অফিসের পুলিশ পরিদর্শক প্রভাষ চন্দ্র ধর।
অন্য আসামিরা হলেন- মো. তৈয়ব, মো. ওয়ায়েস, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মোহাম্মদ রহিম, আবদুর রহমান, আব্দুস শাকুর, নূর হাবিবা, আমাতুর রহিম, আসমাউল হুসনা, আমাতুর রহমান, নূর হামিদা, মোহাম্মদ ওসামা ও হাফেজ নুরুল আলম। তারা সবাই রোহিঙ্গা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী ১৩ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আইডি কার্ড তৈরি করেছেন। এসব আইডি কার্ড দিয়ে পাসপোর্টও করেছেন তারা। ওই পাসপোর্ট দিয়ে ইতোমধ্যে পাঁচজন সৌদি আরবে চলে গেছেন। মামলার আসামি রোহিঙ্গা নাগরিক আবদুল ওয়ারেস দেশে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
রোহিঙ্গারা এভাবে পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেন তৎকালীন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত তিন পুলিশ পরিদর্শক। এছাড়া আইডি কার্ড প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেন তৎকালীন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন।
নুর মোহাম্মদ আনছারী নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে রোহিঙ্গাদের আইডি বাতিলের আবেদন করেন। তার আবেদন তদন্ত করেন মোজাম্মেল হোসেন। কিন্তু সবকিছু জেনে তিনি তদন্ত না করে উল্টো রোহিঙ্গাদের পক্ষে প্রতিবেদন জমা দেন।
এ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, আসামি তিন পুলিশ পরিদর্শক অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রদানে সহযোগিতা করেন। এছাড়া তাদের আইডি কার্ড প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করেন জেলা নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা। তাই তারা চারজন এবং অবৈধভাবে আইডি ও পাসপোর্ট প্রাপ্ত ১৩ রোহিঙ্গাসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।