২১ দিনের ছুটি নিয়ে ৬ মাস যুক্তরাষ্ট্রে, বেবিচকের নির্বাহী প্রকৌশলী বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ
ফাইল ছবি

গত বছরের ডিসেম্বরে ২১ দিনের ছুটি নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিজাইন) মো. শহীদুজ্জামান গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। ছুটি শেষ হওয়ার পরও কাজে না ফেরায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বেবিচক। ই-মেইলে জবাবে, এ কর্মকর্তা নিজেকে অসুস্থ দাবি করেন। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ছুটি চেয়েছেন তিনি। তবে তার এই কর্মকাণ্ড ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ আখ্যা দিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বেবিচক।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য ২১ দিনের ছুটি নিয়ে ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর দেশটিতে যান নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিজাইন) মো. শহীদুজ্জামান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকেও নিয়েছিলেন অনুমোদন। তার ২১ দিনের ছুটি শেষে ১৭ জানুয়ারিতে কাজে ফেরার কথা ছিল। তবে ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও কাজে যোগদান করেননি মো. শহীদুজ্জামান। পরবর্তীতে তিনি শারীরিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রধান প্রকৌশলীকে ই-মেইল করেন। একইসঙ্গে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার সাপেক্ষে ফিরবেন জানিয়ে অনির্দিষ্টকালের ছুটির আবেদন করেন।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, মো. শহীদুজ্জামান নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিজাইন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন বেবিচক। আগেও তিনি ছুটি নিয়ে যথাসময়ে কাজে ফেরেননি। অনুমোদনহীন ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হয়েছিল। পরবর্তীতে বিভাগীয় মামলার শুনানিতে শহীদুজ্জামান ক্ষমা চাইলে তাকে সর্তক করা হয় এবং অনুমোদনহীন ভাবে অনুপস্থিতির দিনগুলোকে বিনা বেতনে ছুটি হিসেবে মঞ্জুর করা হয়।

সূত্র জানায়, মো. শহীদুজ্জামানের আচরণে ক্ষুব্ধ বেবিচক কর্তৃপক্ষ। ছুটি নিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবার সময়ও তিনি কোনও ধরনের অসুস্থতার কথা বলে যাননি। এমনকি এ বিষয়ে বেবিচকেও কোনও যোগাযোগ করেননি তিনি। মো. শহীদুজ্জামানের আচরণকে চাকরি-বিধি লঙ্ঘন হিসেবেই দেখছে কর্তৃপক্ষ। অনুমতি ছাড়া ৬০ দিনের অধিক সময় বিদেশ অবস্থান করায় কর্তৃপক্ষের কর্মচারী প্রবিধানমালার ৪৯(খ) ও (গ) প্রবিধি মোতাবেক ‘অসাদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ সংজ্ঞায়িত অপরাধ আখ্যায়িত করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় ১৩ এপ্রিল। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও করা হয়।

বেবিচকের প্রশাসন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, চাকরি প্রবিধানমালা অনুসারে কেউ অনুমোদন ছাড়া ছাড়া ৬০ দিনের অধিক সময় কর্মস্থলে না থাকলে পলায়ন হিসেবে ধরা হয়। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তকে সশরীরের এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে। মো. শহীদুজ্জামান ৬০ দিনের অধিক সময় অনুমোদন ছাড়া কর্মস্থলে আসেননি, এজন্য তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে, সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে চাকরি প্রবিধানমালা অনুসারেই। তিনি কর্মস্থলে এসে যৌক্তিক ব্যাখা না দিতে পারলে, শাস্তির মুখোমুখি হবেন, স্থায়ীভাবে বরখাস্তও হতে পারেন।

শেয়ার করুন