‘এক হাজার মানুষের জন্য হাসপাতালে বেড ১টি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসপাতাল
ফাইল ছবি

দেশে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে প্রতি হাজার মানুষের জন্য শয্যা শূন্য দশমিক ৯৬টি। অর্থাৎ এক হাজার মানুষের জন্য প্রায় একটি বেড বরাদ্দ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান জরিপ-২০১৯ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেখা গেছে।

universel cardiac hospital

সোমবার রাজধানীর আগাঁরগাওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যার ব্যুরোর অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. মেজবাহুল আলম এবং অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শশাঙ্ক শেখর ভৌমিক। বক্তব্য রাখেন জরিপের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল খালেক।

এতে বলা হয়, দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট থাকায় সঠিক স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সরকারি হাসপাতালগুলো বিদ্যমান শয্যা সংখ্যা বিবেচনায় প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য শয্যা সংখ্যা শূন্য দশমিক ৩২টি। বেসরকারি হাসপাতালের বিবেচনায় এই সংখ্যা প্রায় শূন্য দশমিক ৬৪টি। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল একত্রে বিবেচনা করলে প্রতি এক হাজার জন মানুষের জন্য শয্যাসংখ্যা মাত্র শূন্য দশমিক ৯৬টি। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ করা প্রতি এক হাজার মানুষের বিপরীতে ৩ দশমিক ৫টি হাসপাতাল শয্যার চেয়ে অনেক কম।

চিকিৎসক ও সেবিকার অনুপাত তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি হাসপাতালে একজন চিকিৎসকের (ডেন্টাল সার্জন বাদ দিয়ে) বিপরীতে মাত্র শূন্য দশমিক ৮৫ জন সেবিকা রয়েছে। ডেন্টাল সার্জনদের অন্তর্ভুক্ত করলে প্রতি একজন চিকিৎসকের বিপরীতে সেবিকার সংখ্যা দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ৮৩ জন। শয্যা ও সেবিকার অনুপাতে প্রতি ৩ দশমিক ৪৭টি শয্যার জন্য একজন সেবিকা দায়িত্ব পালন করছেন।

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্থানের আকার: ২০১৮ সালের ৩০ জুন ১৬ হাজার ৯৭৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে মোট ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮০ জন কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। এরমধ্যে ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯৪১ জন (৮৫ দশমিক ৭২ শতাংশ) পূর্ণকালীন এবং ৫২ হাজার ৬৩৯ জন ( ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ) খণ্ডকালীন। মোট নিয়োজিত জনবলের মধ্যে হাসপাতালে ৫৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, রোগ নির্ণয় কেন্দ্র ৩৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং ক্লিনিকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ জনবল নিয়োজিত ছিল। ডেন্টাল ক্লিনিকে নিয়োজিত জনবল ১ দশমিক ১৯ শতাংশ।

বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি: ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও অনুমতির হার ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ, হাসপাতালগুলোর কর্মসংস্থান বৃদ্ধিও হার ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ, মেডিক্যাল ক্লিনিকগুলোর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিও হার ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং দন্ত ক্লিনিকগুলোর প্রবৃদ্ধি শূণ্য দশমিক ৮২ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বাংলাদেশে মোট ১৬ হাজার ৯৭৯টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ছিল। এর মধ্যে রোগ নির্ণয় কেন্দ্র ১০ হাজার ২৯১টি, হাসপাতাল ৪ হাজার ৪৫২টি এবং মেডিকেল ক্লিনিক ১ হাজার ৩৯৭টি। অন্যদিকে ক্লিনিকের সংখ্য ৮৩৯টি।

শেয়ার করুন