আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি গোলের বিশ্বরেকর্ড ছুঁয়েছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। অধিনায়কের এমন স্মরণীয় ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সঙ্গে ড্র করেছে পর্তুগাল। অবশ্য এ ফল সত্ত্বেও ইউরোর শেষ ষোলোয় ওঠা বাধাগ্রস্ত হয়নি। কারণ হার এড়ালেই নকআউটপর্ব নিশ্চিত ছিল পর্তুগালের।
কোপেনহেগেনের পারকেন স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে ‘এফ’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় পর্তুগাল। মৌতিনহোর সেই কিকে জালের কাছাকাছি জায়গায় বলে মাথা ছোঁয়াতে চেষ্টা করেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার দানিলো।
এ সময় পেছন থেকে দৌড়ে এসে বল ঠেকাতে গিয়ে দানিলোর মুখে ঘুষি মেরে বসেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগোব লরিস। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
আর সফল স্পট কিকে বল জালে জড়িয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের ১০৮তম গোল পূরণ করেন রোনাল্ডো। এভাবে মিনিট ১৫ খেলার পর বিরতির ঠিক আগে নিজেদের বক্সে ফরাসি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফেলে দেন সেমেদো। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে রেফারির দিকে তেড়ে যান পর্তুগালের খেলোয়াড়রা।
পরে ভিএআর দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। সফল স্পট কিকে পর্তুগিজ গোলরক্ষক প্যাত্রিসিওকে পরাস্ত করেন ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা।
১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দুদল।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই ব্যবধান বাড়ান বেনজেমা। পল পগবার থ্রো-ইনে পাওয়া বলে বুলেটগতির শট নেন বেনজেমা। বলটি বাঁদিকের পোস্টে লেগে জালে ঢুকে যায়। পর্তুগিজ গোলরক্ষকের কিছুই করার ছিল না। গোলটি নিয়ে প্রথমে যদিও উল্লাসে মাততে পারেনি ফ্রান্স। প্রথমে অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করা হয়, কিন্তু পরে ভিএআর দেখে গোলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
তবে বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেননি ফরাসিরা। ৫৯তম মিনিটে লেফট উইং ধরে বক্সে ক্রস দেন রোনাল্ডো। তার প্রথম প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন কুন্দে, কিন্তু বল রোনাল্ডোর কাছে ফিরে আসে। তিনি আবারও ক্রস দেন এবং এবার ফরাসি ডিফেন্ডারের হাতে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির দাবি জানায় পর্তুগাল। রেফারি তাদের দাবি মেনে নেন। এবারও পেনাল্টি থেকে কিক নেন রোনাল্ডো। গোলরক্ষককে পরাস্ত করে নিজের জোড়া গোল পূরণ করেন।
এর সঙ্গে গোল সংখ্যার বিশ্বরেকর্ড বুকে নাম ওঠান। ছুঁয়ে ফেলেন ইরানি কিংবদন্তি আলি দাইয়ের গড়া সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক গোলের (১০৯ গোল) রেকর্ড।
২-২ স্কোর লাইনে খেলা চলে বাকি ৩০ মিনিট। অর্থাৎ আর কোনো গোল না হওয়ায় ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে দুদল। ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ২ ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছে ফ্রান্স। অন্যদিকে একই রাতে হাঙ্গেরির সঙ্গে ড্র করেও দ্বিতীয় স্থান নিয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে জার্মানি।
অপরদিকে জার্মানির সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় তিনে পর্তুগাল। তবে ছয় গ্রুপের তিনে থাকা সেরা চার দলের একটি হিসাবে নকআউট পর্বে পা রেখেছে পর্তুগিজরাও।