প্রতিবেশীদের ‘অগ্রাধিকার’ দিয়ে আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে অথবা আগস্টের শুরুতে করোনারোধী টিকা রফতানি আবারও শুরু করতে পারে ভারত। সেটি যদি পুরোদমে সম্ভব না-ও হয় তাহলে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের মতো যেসব প্রতিবেশী টিকা কিনেছিল, অন্তত তাদের পাওনা অংশটুকু পাঠানো হতে পারে। গত বুধবার ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে ভুটানের যে টিকা পাওয়ার কথা, সেটিও ওই সময় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছাড়া হবে বলে জানা গেছে।
দ্য প্রিন্ট বলছে, ভারতীয় রাষ্ট্রদূতেরা প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়মিত আশ্বস্ত করছেন যে, নয়াদিল্লি টিকা সরবরাহ শুরু করতে প্রচণ্ড আগ্রহী। তবে এতে এখনো মাসখানেক সময় লাগতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এদিকে, গত বুধবারই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। তবে বৈঠক শেষে কোনো পক্ষ কিছু জানায়নি।
বাংলাদেশকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্টজেনেকা উদ্ভাবিত টিকার তিন কোটি ডোজ সরবরাহ করার কথা ছিল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের। এর জন্য আগাম অর্থও দেয়া হয়েছিল তাদের। কিন্তু নিজস্ব চাহিদা মেটানোর কথা বলে গত এপ্রিলে আচমকা টিকা রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাংলাদেশকে ৫০ লাখ টিকা সরবরাহের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৭০ লাখ ডোজ পাঠিয়েছে সিরাম। ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাকি ২ কোটি ৩০ লাখ ডোজ পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’, চীনের সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের তৈরি টিকা, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের উৎপাদিত পৃথক দুটি টিকার। ইতোমধ্যে সেগুলোর বেশ কিছু চালান দেশে পৌঁছানোর পর ব্যবহারও শুরু হয়ে গেছে।
এ বিষয়েই ইঙ্গিত করে দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার সুযোগে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে চীন ও রাশিয়া তাদের উদ্ভাবিত করোনা টিকা দেয়ার প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে যায়।
সূত্রমতে, মোদি সরকারের বিশ্বাস, ভারত যদি রেকর্ডসংখ্যক টিকাদান অব্যাহত রাখতে পারে, তাহলে আগামী আগস্ট নাগাদ অন্য দেশে টিকা পাঠানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাবে। তবে টিকা রফতানি শুরু হলেও সেক্ষেত্রে ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ পাবে প্রতিবেশীরা। কারণ তাদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে টিকা কিনতে অর্থ দিয়েছে।