রাজধানীতে গোপন ছাপাখানায় তৈরি হতো জাল স্ট্যাম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপরাধ

রাজধানীতে জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি প্রস্তুতকারী একটি বড় চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। এই চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০ কোটি টাকার বেশি জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

universel cardiac hospital

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- আবু ইউসুফ ওরফে পারভেজ ওরফে রানা, আতিয়ার রহমান সবুজ, নাসির উদ্দিন ও নুরুল ইসলাম ওরফে সোহেল।

শুক্রবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেপ্তারকালে বিভিন্ন মূল্যমানের ২০ কোটি দুই লাখ ২৪ হাজার টাকা সমপরিমাণের ১৩ লাখ ৪০ হাজার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের ১৯ হাজার ৪০০ ৮০টি জাল কোর্ট ফি, জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প বিক্রির নগদ তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা, ১১৪ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার, আটটি মোবাইল ফোন, একটি পেনড্রাইভ, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১১টি সিল ও বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। এছাড়া শত কোটি টাকার জাল স্ট্যাম্প তৈরির কাগজ জব্দ করা হয়েছে।

ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তার চক্রের মূলহোতা আবু ইউসুফ। জালিয়াতি এ চক্রটি ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত কম্পিউটার এবং কালার প্রিন্টার ব্যবহার করে সীমিত পরিসরে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তারা ২০১৯ সালে মাতুয়াইলে একটি গোপন ছাপাখানা বসিয়ে বড় পরিসরে জালিয়াতি ব্যবসাটি শুরু করে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, তারা প্রথম পর্যায়ে সুদক্ষ অপারেটর দিয়ে গোপন ছাপাখানায় বিভিন্ন মূল্যমানের জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ছাপায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছাপানো রেভিনিউ স্ট্যাম্পগুলো ছাপাখানা থেকে জালিয়াতি চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে হোলসেলার ভেন্ডারদের কাছে পৌঁছে যায়। তৃতীয় পর্যায়ে হোলসেলারদের মাধ্যমে রিটেইলারদের কাছে যায় এবং পরবর্তী সময়ে ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছায়।

এ চক্রটি বিভিন্ন গার্মেন্টস, ফ্যাক্টরি,সরকারি- বেসরকারি দপ্তর, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন পোস্ট অফিস, আদালত, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাসপাতালে এ জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি বিক্রি করতো বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। এ ধরনের জাল স্ট্যাম্পের কারণে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ গোয়েন্দা এ কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন