করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ঠেকাতে আগামী সোমবার থেকে সারাদেশে সাত দিন ‘কঠোর লকডাউন’ জারির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই খবর শোনার পর থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া ফেরিঘাটে। অনেকটা ঈদযাত্রার মতো দলে দলে বাড়ি যাচ্ছেন তারা। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি করে ফেরিতে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছেন তারা। যে যেভাবে পারছেন ফেরিতে করে ফিরছেন বাড়িতে, কার আগে কে বাড়ি যাবে প্রতিযোগিতা চলছে।
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব রোধে আগামী সোমবার থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই শহর ছাড়তে শুরু করেছেন বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ। ফলে মহাসড়কগুলোর ন্যায় মানুষের চাপ বেড়েছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরি ঘাটেও।
শনিবার সকাল থেকেই দেখা যায় শিমুলিয়া (মাওয়া) নৌ রুটে যানবাহন ও ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড়। কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই নিজ নিজ গন্তব্যে যাত্রা করছে ঘরমুখী মানুষেরা।
সকাল ১১টায় ঘাট এলাকায় ঘরেফেরা মানুষের এমন ভিড় চোখে পড়েছে। মানুষের চাপে ফেরিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। শত শত যাত্রী নিয়েই একেকটা ফেরি নদী পার হচ্ছে।
ঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের চাপ বাড়ার কারণে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। এসব ফেরিতে পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি পরিষেবার গাড়ির পাশাপাশি যাত্রীরাও পারাপার হচ্ছেন। লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার বন্ধ থাকায় ফেরিতে করেই প্রমত্তা পদ্মা পার হচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ।
এদিকে ঘাট এলাকার দুই পাড়ে সহস্রাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে আছে। এমন অবস্থায় বিভিন্ন চেকপোস্টে ঘাটে আসা যাত্রীবাহী গাড়ি আটকে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবুও কিছুতেই মানুষ মানছে না নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
তবে গণপরিবহন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে গন্তব্য যেতে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়ছে মানুষ। ৩ নম্বর পন্টুন সংযোগ সড়ক বর্ষার পানিতে জলাবদ্ধতা হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়ে গেছে।
শিমুলিয়া ঘাটে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লকডাউনের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাটে আসতে তাদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সিএনজি অটোরিকশায় গাবতলী বা সাভার থেকে আসতে তাদের কয়েক গুণ বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের টার্মিনাল সুপারিটেনডেন্ট মেহেদী হাসান মত ও পথকে জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ রুটের ১৫টির মধ্যে ১৪টি ফেরিই চলাচল করছে। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী ফেরিতে শুধু রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি পণ্য পরিবহনের গাড়ি ছাড়া সব কিছু পারাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মানুষের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ঘাটে ভিড় জমাচ্ছেন যাত্রীরা।’