সোমবার থেকেই গণপরিবহন ও মার্কেট বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা শহরে লকডাউন
ফাইল ছবি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত লকডাউন আগামীকাল সোমবার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হচ্ছে। এদিন থেকেই সারাদেশে গণপরিবহন, মার্কেট, শপিং মল, পর্যটনস্পট ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

আজ রোববার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এসব কথা বলা হয়।

দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় গত শুক্রবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে এক সপ্তাহের লকডাউনের কথা জানানো হয়। তবে শনিবার সরকারের উচ্চপদস্থ এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হলেও সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে বৃহস্পতিবার থেকে। অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় লকডাউনের সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়।

মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২৮ জুন সকাল ৬টা থেকে ১ জুলাই সকাল ছয়টা পর্যন্ত সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

সকল শপিং মল, মার্কেট, পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

খাবারের দোকান ও হোটেল ও রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (শুধুমাত্র অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।

সরকারি-বেসরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠানসমূহে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তা কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেয়া করতে হবে।

জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য আরও প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। প্রয়োজনের ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

দেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি ১৪ দিনের সর্বাত্মক শাটডাউনের সুপারিশ করে বৃহস্পতিবার। যদিও সরকার শাটডাউন নয়, এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে এই সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গেছে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার ১০ দিন পর প্রথম কোনো করোনা রোগী মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই মাসের ২৬ তারিখ দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়, যেটি লকডাউন হিসেবে পরিচিতি পায়। কয়েক মাস কার্যত অচল থাকে গোটা দেশ। পরে সংক্রমণ আস্তে আস্তে কমতে থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রায় সবকিছুতেই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসে দেশ। করোনা সংক্রমণ গত বছরের শেষ দিকে এমনকি চলতি বছরের শুরুর দিকে তিন শতাংশের নিচে নেমেছিল।

কিন্তু সংক্রমণের সেই নিম্নগতির ধারা ধরে রাখা যায়নি পরবর্তী সময়ে। চলতি বছরের মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতির আবার অবনতি হতে থাকে। এপ্রিলের শুরুতে সরকার দেশে বিধিনিষেধ এবং ১৪ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয়বারের মতো লকডাউন জারি করে। লকডাউন চলে সপ্তাহ খানেক, তবে টানা কয়েক বিধিনিষেধ চলার পর সংক্রমণ কমে আসায় শিথিল করা হয় সবকিছু।

করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তা আবার অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। এই পরিস্থিতিতে সারাদেশে শাটডাউনের সুপারিশ করে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

শেয়ার করুন