আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম হেফাজতে ইসলামকে ‘স্বাধীনতাবিরোধী জঙ্গি সংগঠন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। ২৮ জুন সংসদের বৈঠকে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান। আমরা দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিক হিসেবে তাঁর দাবির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে একমত।
আমাদের দাবির সমর্থনে যৌক্তিক কারণ হিসেবে বলা যায়, আজকের হেফাজতে ইসলাম- একাত্তরে ছিল স্বাধীনতাবিরোধী নেজামে ইসলামী। তাই হেফাজতিরা স্বাধীন বাংলাদেশ ও আমাদের স্বাধীনতা দিবস সহ্য করতে পারে না এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সরকার পতন।
বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসাকে এসব স্বাধীনতাবিরোধী ও ধর্মব্যবসায়ীরা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বানিয়েছে; কোরআন শরীফ পুড়িয়েছে, মানুষ পুড়িয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হলো- মানুষ মেরে এরা ইসলামকে হেফাজত করবে কিভাবে? আর মানুষ মারা তো ইসলামের শিক্ষা নয়। তার মানে হচ্ছে, হেফাজতে ইসলাম ভুল আদর্শে বিশ্বাসী একটি জঙ্গি সংগঠন, এ সংগঠনকে অবিলম্বে যেভাবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হয়েছে সেভাবে নিষিদ্ধ করা হোক।
সাম্প্রদায়িকতা রাষ্ট্র, মানবতা ও ধর্মের প্রধান শত্রু। যে কারণে স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান এদের আবারও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। আর স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তিই আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। হেফাজতে ইসলাম সেই স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তিরই একটি নতুন রূপ।
রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র, ধর্ম ও মানবতাবিরোধীদের অবাধ তৎপরতার সুযোগ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য কখনও সুখকর হতে পারে না। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও মুজিবাদর্শে দৃঢ় অবস্থানই স্বাধীনতাবিরোধী এই চক্রটিকে মোকাবেলা করতে সক্ষম। আর এদের প্রতিহত এবং নির্মূল করার এখনি সময়। তাই হেফাজতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করে সময়ের দাবি পূরণ করার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।