দেশে গত এক দিনে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন দিন দেশে শতাধিক মৃত্যু হলো করোনায়। গতকাল মৃত্যু ছিল ১০৪ জনের, তার আগেরদিন রেকর্ড ১১৯ জনের।
এদিকে গত এক দিনে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে আগেরদিনের তুলনায়। এসময়ে নতুন করে ৭ হাজার ৬৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের হার ২৩.৯৭ শতাংশ। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৪ হাজার ৪৩৬ জনে।
আজ মঙ্গলবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ হাজার ৯৮২টি নমুনা পরীক্ষায় ৭ হাজার ৬৬৬ জন শনাক্ত হন। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮২২টি। পরীক্ষা বিবেচনায় এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৬৭ জন ও নারী ৪৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৬১ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৪, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১০, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৪, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন।
এদিকে গত একদিনে করোনামুক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ১১ হাজার ৭০০ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা হয়।
এরমধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।