জান্তাবিরোধীদের নিয়ে গঠিত পিপল’স ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সঙ্গে সংঘর্ষে মিয়ানমারের অন্তত ৪৪ সেনা নিহত হয়েছে। দেশটির সাগিং এলাকায় ৭২ ঘণ্টা সংঘর্ষে জান্তার পক্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর ‘মিয়ানমার নাউ’।
এর আগে গত ২২ জুন বিবিসি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালায়ে পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ায় বলে খবর প্রকাশ করে।
এই ঘটনার আগে পিডিএফ সদস্যরা দুর্গম ও ছোট ছোট এলাকায় সক্রিয় ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সক্রিয়তায় জান্তাবিরোধী আন্দোলন নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
জান্তার সেনা নিহতের বিষয়ে স্থানীয় প্রতিরোধ আন্দোলনের সদস্যদের বরাতে মিয়ানমার নাউয়ের খবরে বলা হয়েছে, হিতিজিয়াং ও কাথা শহরে ২৪ জুন থেকে ২৬ জুন তিন দিন সংঘর্ষে জান্তার ৪৪ সেনা নিহত হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পিডিএফ যোদ্ধাদের সহায়তা করেছে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ)। তবে বিষয়টি ‘মিয়ানমার নাউ’ স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি।
গত সোমবার হিতিজিয়াং পিডিএফ শাখা ঘোষণা জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় তারা মাও কুন তাউং শহরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর একটি বহরে আক্রমণ করেন। এতে সেনাবাহিনীর ১৪ সদস্য নিহত এবং ৭ জন আহত হয়। হিতিজিয়াংয়ের একজন বাসিন্দা জানান, শহরে জান্তার সঙ্গে পিডিএফ বিদ্রোহীদের এটা ছিল প্রথম সংঘর্ষ।
স্থানীয় ওই বাসিন্দা বলেন, এখানে সেনাবাহিনীর কোনো ঘাঁটি নেই। শুধুমাত্র নিরাপত্তার কারণে তারা এসেছিল। সেনাবাহিনী এসে দু’তিন দিন থেকে আবার চলে যাচ্ছে।
পিডিএফ বিদ্রোহীরা সেনাবহরে আক্রমণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এলাকার বাসিন্দারা ভেবেছিল জান্তা গ্রামগুলোতে আক্রমণ করেছে। এই সংঘর্ষের আগে হিতজিয়াংয়ের একজন তরুণ নিহত হন। এরপর সেনাবাহিনীর প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও ঘৃণা বাড়তে থাকে।
অন্যদিকে, গত ২৪ জুন পিডিএফের কাথা শাখা বিদ্রোহীরা হিতিজিয়াংয়ের ১০০ কিলোমিটার উতরপূর্বে শিউ কিয়াং গ্রামে সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে।এতে জান্তার ৩০ জনের বেশি সদস্য নিহত হয়।
এই সংঘর্ষে কাচিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিডিএফকে সহায়তা করে। কাচিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একজন তথ্য কর্মকর্তা কর্নেল ‘নাউ বু’ বলেন, তারা তাদের সদস্যদেরকে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সকে সহায়তার নির্দেশ দেননি। কিন্তু তাদের সেনারা স্বতন্ত্রভাবে পিপিএফকে সহায়তা করেছে।
তবে এ বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেনি বিদেশ থেকে পরিচালিত গণমাধ্যম ‘মিয়ানমার নাউ’।