রাজধানীর মগবাজারে ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৮ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আশেক ইমামের আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করে এই দিন ধার্য করেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে রমনা মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. রেজাউল করিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অবহেলাজনিত প্রাণহানির অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ধসেপড়া ভবন মালিকের অব্যবস্থাপনা, অতিপুরাতন বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন, ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ব্যবস্থাপনা অথবা ভাড়াটিয়া দোকানদার শর্মা হাউজের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা অথবা বেঙ্গল মিটের অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা, অথবা গ্র্যান্ড কনফেকশনারির অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রীর ব্যবহার ও অবহেলা অথবা দ্বিতীয় তলায় সিঙ্গার ইলেকট্রনিকসের অননুমোদিত বৈদ্যুতিক সামগ্রী মজুত রাখা ও অবহেলা অথবা তিতাস গ্যাস কোম্পানির অবহেলাজনিত গ্যাস সরবরাহ অথবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানির ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ অথবা ঘটনাস্থলের সামনে সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত ও গাফিলতিপূর্ণ ড্রেন খনন কাজের জন্য এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। যা পেনাল কোডের ৩০৪-ক ধারার অপরাধ।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ২৭ জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রমনা মডেল থানাধীন বড় মগবাজারের রেখা নীড় ভবনের কোনো অংশে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ভবনের সামনের ও পেছনের অংশ ধসে পড়ে এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের বিকট শব্দের ফলে ভবনের সামনে তিনটি যাত্রীবাহী বাস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বাসের যাত্রীরা আহত হন। আশপাশের কয়েকটি ভবন, তার মধ্যে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৭, ৭৮,৭৯/১, ৮১ নম্বর ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপারে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভবনে অবস্থানরত লোকজনসহ সাধারণ পথচারীও জখম হন।
পরবর্তীতে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট, সিআইডি ক্রাইম সিন, পিবিআই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে খোঁজ-খবর নেয়া হয়। এ সময় জানা যায়, ঘটনায় জখমপ্রাপ্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান, স্বপন মিয়া, আবুল কাশেম মোল্লা, রুহুল আমিন নোমান, জান্নাত কাকলি ও সোবহানা ওরফে তায়েবা নিহত হয়েছেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মৃতদের মধ্যে জান্নাত কাকলি ও তার মেয়ে সোবহানা ওরফে তায়েবা ধসেপড়া ভবনের নিচতলা শর্মা হাউজের ভেতরে ছিলেন। মৃত আবুক কাশেম মোল্লা ক্ষতিগ্রস্ত আজমেরী পরিবহন বাসের চালক। তিনি ধসেপড়া ভবনের সামনের রাস্তায় ছিলেন। এছাড়া এ ঘটনায় আহত ৪০ থেকে ৫০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফিরে গেছেন।