করোনায় একদিনে রেকর্ড ১৪৩ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের দাফন
ফাইল ছবি

সারাদেশে গত একদিনে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৪৩ জন, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে টানা পাঁচ দিন দেশে করোনায় শতাধিক মৃত্যু হলো।

এদিকে সংক্রমণ আজও ৮ হাজারের উপরে। গত একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৩০১ জন। এক দিনে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে আগেরদিনের তুলনায়। ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৫.৯০ শতাংশ। গতকাল ছিল ২৫.১৩ শতাংশ।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ হাজার ৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৮ হাজার ৩০১ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৯ লাখ ২১ হাজার ৫৫৯ জন। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৬৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ২০ হাজার ৯১৩ জন।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯০ জন পুরুষ এবং ৫৩ জন নারী। এদের মধ্যে ৪৬ জনই খুলনার। এছাড়া ঢাকায় ৩৫, চট্টগ্রামে ১৫, রাজশাহীতে ১৯, বরিশালে ৮, সিলেটে ৭, রংপুরে ১০ এবং ময়মনসিংহে ৩ জন মারা গেছেন।

নতুন মৃতদের মধ্যে ৭০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪২, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৮, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১১, ১১ থেকে ২০ বছরের ১ এবং দশ বছরের নিচে ১ জন রয়েছেন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ২১ হাজার ৫৫৯ জনে।

দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা হয়।

এর মধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান।

বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

শেয়ার করুন