আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ডে চলমান রাজতন্ত্র বিরোধী আন্দোলন চরম সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার বিদেশি মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুট করে জ্বালিয়ে দিয়েছে স্থানীয়রা। এতে করে কয়েকশ বাংলাদেশি দোকান হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। পরিবার নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন প্রবাসীরা।
এখন পর্যন্ত দেশটিতে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ২১ জন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। সময়ে সময়ে বন্ধ থাকছে মোবাইল ইন্টারনেট। নতুন নতুন অঞ্চলে জারি করা হচ্ছে কারফিউ।
আফ্রিকার এই দেশটিতে সপ্তাহ ধরে চলা এই ভয়াবহ আন্দোলনে অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন বেশির ভাগ বাংলাদেশি পরিবারগুলো। কর্তৃপক্ষের সময়ে সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ ও ধীর গতির কারণে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও ক্ষীণ হয়ে আসছে।
এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াস্থ দূতাবাস থেকে কার্যকরী ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুত উদ্ধার ও মানবিক সহযোগিতা কামনা করেছেন সোয়াজিল্যান্ড প্রবাসী পরিবারগুলো।
সোয়াজিল্যান্ড থেকে প্রবাসী তৌহিদুল ইসলাম একটি গণমাধ্যমকে বলেন, দেশটিতে দুই হাজারের মতো বাংলাদেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। বেশিরভাগ প্রবাসীই সেখানে তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে ভালোভাবেই বসবাস করছিলেন তারা।
তিনি বলেন, এরকম ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি এর আগে সোয়াজিল্যান্ডে কেউ দেখেনি। হঠাৎ করে কয়েকদিনের মধ্যে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে এটা কেউ ভাবতেই পারেনি। এই ঘটনায় বাংলাদেশিদের বহু দোকান একেবারে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে তারা। এরকম হিংসাত্মক তৎপরতায় প্রবাসীরা কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশা ও আতঙ্কে দিন যাপন করছেন।
সোয়াজিল্যান্ড বাংলাদেশি কমিউনিটির একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে বলেন, সরকার পুলিশ ও সেনাবাহিনী নামিয়েছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা থমথমে আছে তবে ৫ জুলাই পর্যন্ত রাজপরিবারের প্রতি ডেটলাইন ছুড়ে দিয়েছে সোয়াজিল্যান্ডের জনগণ। এর মধ্যে রাজপরিবারের সম্পদের হিসাব ও রাজা কর্তৃক নিয়োজিত প্রধানমন্ত্রী ও কয়েকজন দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রী ও এমপিরা পদত্যাগ না করলে তারা দেশব্যাপী রাজপথে আরও কঠোর আন্দোলনে নামবে বলে জানা গেছে। এটা নিয়ে নতুন আতঙ্কে পড়েছি আমরা।
- আরও পড়ুন >> ফিলিস্তিনে আবারও ইসরায়েলি বিমান হামলা
জানা গেছে, সোয়াজিল্যান্ডে চলমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতীয় দূতাবাস থেকে একটি টিম দেশটিতে গিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে নিয়েছে।
এদিকে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা দাবি জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন তাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, সোয়াজিল্যান্ডে প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।