ঢাবি-জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও টিকার তালিকায় নেই ৭ কলেজ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাবির অধিভুক্ত সাত কলেজ
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্থবির শিক্ষাব্যবস্থা। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর বিভিন্ন সময়ে খোলার ঘোষণা এলেও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷

এর অংশ হিসেবে টিকা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক লাখ তিন হাজার ১৫২ জন আবাসিক শিক্ষার্থীর তালিকা স্বাস্থ্য অধিদফতরকে দিয়েছে। ইউজিসির ওই তালিকায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকলেও নেই সাত কলেজের নাম।

এই সাত কলেজ এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ছিল। সেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যায় টিকা প্রাপ্তির তালিকায় রয়েছে।

তালিকার ওপর ভিত্তি করে গত বৃহস্পতিবার থেকে সুরক্ষা ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতে নিবন্ধন করতে পারছেন না সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি আবাসিক শিক্ষার্থী থাকার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা টিকা পাচ্ছেন না। কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে এ বিষয়েও কেউ সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য দিতে পারেননি।

এ অবস্থায় টিকা প্রাপ্তি দেরি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে দেরি হবে। সেই আভাস থেকে সেশনজট আরও দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা ৷

ইউজিসি সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ২২০টি আবাসিক হল রয়েছে। এগুলোতে আবাসিক শিক্ষার্থী প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এক লাখ তিন হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে।

টিকাদানের এই পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের দায়িত্ব না নেয়, তাহলে কে নেবে? উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিকার তালিকায় আসলেও আমাদের নামই নেই সেখানে! এমন বৈষম্য কেন? আমরা চাই টিকা দিয়ে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক।

ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের মধ্যে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজে আবাসিক হল রয়েছে। এসব কলেজে প্রায় ৩০ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়েছে। আমরা আমাদের আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠিয়েছি। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এ বিষয়ে সাত কলেজ অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা ভালো বলতে পারবেন।

সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, এখন পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেউ আমাদের কাছে কোনো ধরনের তথ্য চায়নি। আমাদের ডিজিটাল ডাটাবেজে সব শিক্ষার্থী এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের তালিকা করা রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে তারা চাইলেই আমরা সেটি দিতে পারব। কেন এখন পর্যন্ত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের তালিকা করা হলো না সে বিষয়ে আমি অবগত নই। বিষয়টি নিয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে কথা বলব।

শেয়ার করুন