পুরো নাম ফাতিমা সানা শেখ। বলিউডের এ প্রজন্মের একজন সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রী। ২০১৬ সালে ‘দঙ্গল’ ছবিতে আমির খানের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে এর পরের ছবি ‘ঠগস অব হিন্দুস্থান’-এ মেয়ে থেকে হয়ে যান নায়িকা। ২০১৮ সালে এ ছবি মুক্তির পর থেকেই ৫৬ বছর বয়সী আমির খানের সঙ্গে ২৯ বছর বয়সী ফাতিমার সম্পর্ক নিয়ে শুরু হয় গুঞ্জন।
খোদ ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেই ফিসফাস চলছিল, বলিউডের ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ নাকি তার মেয়ের বয়সী অভিনেত্রীর সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন। কিন্তু সে সময় আমির খানকে ‘স্যার’ সম্মোধন করে ফাতিমা একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, ‘আমির স্যারকে আমার ভালো লাগে। কিন্তু ওনার সঙ্গে আমার কোনো প্রেমের সম্পর্ক নেই। বরং তাঁকে আমি আমার মেন্টর মনে করি।’
অন্যদিকে, আমির খান তো কখনোই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। এর কিছুদিন পর হাওয়ায় মিলিয়ে যায় আমিরের সঙ্গে ফাতিমার প্রেমের গুঞ্জন। কিন্তু দুই বছর পর আমির খান ও কিরণ রাওয়ের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণার সুবাদে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে ‘দঙ্গল’ কন্যা ফাতিমা সানা শেখ। শনিবার টুইটারে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন আমির ও কিরণ।
বলিউডের অন্যতম পারফেক্ট এ জুটির ১৫ বছরের সংসার ভাঙার জন্য ফাতিমাকে দায়ী করছেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশ। তাদের দাবি, একসময় কিরণ রাওয়ের প্রেমে পড়ে প্রথম স্ত্রী রীনা দত্তকে ডিভোর্স দিয়েছিলেন আমির খান। এবার মেয়ের বয়সী নায়িকা ফাতিমা সানা শেখকে আপন করে পেতে সেই কিরণকেও পর দিলেন বলিউড সুপারস্টার।
কিন্তু নেটিবাসীর অন্য একটি অংশ এই দাবিকে ফুঁ মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের যুক্তি, ২০১৮ সালে ‘ঠগস অব হিন্দুস্তান’ মুক্তির পর আর কোনো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেননি আমির খান ও ফাতিমা। বরং তাদের প্রেমের গুঞ্জন ছড়ানোর পর তারা একে-অন্যের সঙ্গে বেশ দূরত্ব বজায় রেখে চলতেন। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কোনো অনুষ্ঠানেও তাদের একসঙ্গে দেখা যায়নি।
তারা এও বলছেন, তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে কোনো কিছুই লুকানো সম্ভব নয়। আমির খান ও ফাতিমার মধ্যে যদি তেমন কোনো সম্পর্ক থাকতো, তবে অবশ্যই তা সাংবাদিকদের ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়তো। কারণ পাপারাৎজিদের ক্যামেরা বর্তমানে তারকাদের বেডরুম পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তাই আমির খানের সঙ্গে ফাতিমার সম্পর্কের তেমন কোনো ভিত্তিই নেই।
এদিকে, শনিবার টুইটারের মাধ্যমে আমির খান ও কিরণ রাওয়ের দেয়া বিবাহবিচ্ছেদের যৌথ বিবৃতিতেও তেমন কিছুর ইঙ্গিত নেই। অর্থাৎ, সংসার ভাঙার কোনো কারণই ‘সাবেক’ এই দম্পতি উল্লেখ করেননি। বরং তারা একে-অন্যের সঙ্গে সারাজীবন বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখবেন বলে জানান। এও জানান, ছেলে আজাদ রাওয়ের দেখভালের কাজটাও তারা যৌথভাবে করবেন।
২০০৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেছিলেন আমির খান ও কিরণ রাও। ২০১১ সালে জন্ম হয় ছেলে আজাদ রাওয়ের। আমির খানের দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণ ছিলেন তার ‘লগান’ ছবির সহকারী পরিচালক। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া এ ছবির শুটিং সেট থেকেই মন-দেয়া করেছিলেন আমির খান ও কিরণ রাও। তিন বছর লিভ ইন সম্পর্কে থাকার পর ২০০৫ সালে তারা বিয়ে করেন।
এর আগে ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে ১৯৮৬ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা রীনা দত্তকে বিয়ে করেন আমির খান। অভিনেতার ওই সংসারে জুনাইদ খান ও ইরা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। কিন্তু কিরণ রাওয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে ২০০২ সালে রীনা দত্তকে ডিভোর্স দেন আমির খান। এবার কোন সম্পর্কের টানে তিনি কিরণ রাওকে ছাড়লেন, তাতো সময়ই বলে দেবে।