পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার, যা বললেন নুর ও রাশেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নুর-রাশেদ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ম্যাসেঞ্জারে ‘কমল বড়ুয়া’ নামে একটি গ্রুপ খুলে সংগঠনের গোপন তথ্য ফাঁস করার সংশ্লিষ্টতা পেয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক নুরুল হক নুর। আবার তাকে বহিষ্কার করায় নুরের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে নুরকে নোটিশ পাঠিয়েছেন রাশেদ খাঁন।

শনিবার রাতে ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এসব বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন নুর ও রাশেদ।

নুরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র, যুব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের যৌথ আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন নেতৃত্ব বাছাই ও কমিটি গঠনে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নুরুল হক নুর এবং রাশেদ খাঁন উভয়েই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা উভয়েই সঠিক কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন।

নুরুল হক নুর বলেন, গত ১ জুলাই রাশেদ খাঁন ‘কমল বড়ুয়া’ নামের ম্যাসেঞ্জারে একটি গ্রুপ খুলে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে এবং এটি আমাদের দৃষ্টিগোচরে আসে। এখানে পাঁচজন জড়িত থাকলেও রাশেদ খান ও সোহরাবের সংশ্লিষ্টতা বেশি পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে তাদের অব্যহতি দিয়ে মূল বিষয় জানার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা সংগঠনে বিভাজন ও ভাঙনের একটা অপচেষ্টা করছে। এই বিষয়টা আমাদের দৃষ্টিগোচরে এলে আমরা ২ জুলাই ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিই রাশেদ খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেনকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়ার। পাশাপাশি, পুরাতন কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন কমিটি গঠনের জন্য আবু হানিফকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তাই পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।’

নুর বলেন, আমরা যেহেতু সরকারবিরোধী আন্দোলন করি সেহেতু সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি তৎপর থাকে সংগঠনে ভাঙন ধরাতে। আমরা মনে করেছি যে ম্যাসেঞ্জারে গ্রুপ খুলে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক তথ্য বাইরে পাচার করা এজেন্সিগুলোর চক্রান্ত আর এর আগেও যেহেতু সংগঠনে ভাঙন ধরেছিল তাই সচেতনতার অংশ হিসেবে এটা করা হয়েছে।

এদিকে রাশেদ তাকে কারণ দর্শানোর যে নোটিশ দিয়েছেন এ সম্পর্কে নুর বলেন, রাশেদ যে প্রেস রিলিজ দিয়েছে সেটা নিজের থেকে পাগলামি করেই দিয়েছে। এটার সঙ্গে সাংগঠনের কোনো বিষয় জড়িত না। আমাদের চারটি অঙ্গ সংগঠন- ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদ। আমাদের যেহেতু কোনো মূল সংগঠন নেই সেহেতু ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদে সমন্বিত সিদ্ধান্ত নিই। সুতরাং এখানে সমন্বয়ক পদ নিয়ে কোনো কথা হতে পারে না। আমরা এর আগেও কমিটির সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় সমন্বয়ক পদবিটি ব্যবহার করেছি।

এ বিষয়ে ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক কখনো আহ্বায়ককে বিলুপ্ত করতে পারে না। নুর যে কাজটি করেছেন তা অসাংগঠনিক। এজন্য তাকে সাত দিনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জবাবদিহিতার আলোকে সমস্যাটির সমাধানের চেষ্টা করছি। নুর বিষয়টি ফেসবুকে পোস্ট দেয়ায় আমার সম্মানের ক্ষতি হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের সাথে যারা গুরুত্বপূর্ণ নেতা আছেন তাদের সবার সাথে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেব।

শেয়ার করুন