করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধের অষ্টম দিনে যাত্রাবাড়ী এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চেকপোস্টগুলোতে শিথিলতা দেখা গেছে। বিধিনিষেধের প্রথম দিনগুলোতে যে চেক পোস্টগুলোতে প্রায় প্রতিটি গাড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হচ্ছিল, বৃহস্পতিবার সেখানে গা-ছাড়া ভাব দেখা গেছে।
কিছু কিছু চেকপোস্ট অনেকটাই খালি পড়ে আছে। ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা কিংবা কনস্টেবলদের আশপাশে বসে গল্প করতে দেখা গেছে। এসব চেকপোস্ট দিয়ে অবাধে গাড়ি চলাচল করছে। এই মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যাও ছিল অনেক বেশি। মানুষের চলাচলও বেড়েছে।
তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শনির আখড়া চেকপোস্টে কিছুটা কড়াকড়ি দেখা গেছে।
যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগে ঢাকায় প্রবেশ ও ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে বিধিনিষেধের প্রথমদিন থেকেই চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। শুরুর দিনগুলোতে এই চেকপোস্টে কড়াকড়ি ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুটি পোস্টে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা গেছে, কোনো গাড়িকে পুলিশের চেকের মুখে পড়তে হচ্ছে না। অবাধে গাড়ি চলাচল করছে।
এ মহাসড়ক দিয়ে প্রচুর প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও রিকশা চলতে দেখা গেছে। কিছু কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশাও চলতে দেখা গেছে।
রায়েরবাগে মহাসড়কের উত্তর পাশে (ঢাকা থেকে বের হওয়ার দিক) চেকপোস্টের পাশে একটি টং ঘরে দুজন ট্রাফিক কনস্টেবল নিয়ে বসে ছিলেন ডেমরা ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট শেখ এমরান হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বের হওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের মূল চেকপোস্ট শনির আখড়ায়, আর প্রবেশের মূল চেকপোস্ট সাইনবোর্ডের কুবা মসজিদ এলাকায়। আমরাও এখানে চেক করি। তবে মূল চেকগুলো ওখানেই হয়। আমরা চেকপোস্টে আছি।’
দক্ষিণ পাশের চেকপোস্টেও দুজন ট্রাফিক কনস্টেবলকে যাত্রী ছাউনির নিচে বসে থাকতে দেখা গেছে।
শনির আখড়া চেকপোস্টে কিছুটা কড়াকড়ি ছিল। তবে গাড়ির চাপ বেশি থাকায়, সেখানে হিমশিম খাচ্ছিলেন ট্রাফিক বিভাগের কর্মীরা। এ কারণে অনেক গাড়িকেই কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া ছেড়ে দিতে হচ্ছিল।
সেখানে কথা হয় যাত্রাবাড়ী ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. তারিকুল ইসলাম মাসুদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘চেক করার সুবিধার জন্য চেকপোস্টে আমরা তিন ধরনের গাড়ি চলার জন্য তিনটি লাইন করেছি। গাড়ি চলাচল আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানও খুলছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাদের চলাচল করার কথা আমরা তাদের বাধা দিচ্ছি না। এর বাইরে কেউ আসলে আমরা মামলা দিচ্ছি।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ ছিল ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। পরে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও ৭ দিন অর্থাৎ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ২১টি শর্ত দেয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী, এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা। জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না এই সময়ে।